আজকে পবিত্র জুমার দিন: মুসলিমদের করণীয় এবং বর্জনীয়
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
প্রিয় পাঠক! আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। কেমন আছেন সবাই আশা করি আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়া এবং আল্লাহর অসীম রহমতে ভালো আছি। আজকের আলোচনা "আজকে পবিত্র জুমার দিন: মুসলিমদের করণীয় এবং বর্জনীয়" নিয়ে।
জুমা (শুক্রবার) মুসলমানদের জন্য একটি বিশেষ এবং পবিত্র দিন। ইসলাম ধর্মের মতে, জুমা হলো সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন এবং এই দিনে মুসলমানদের জন্য বিশেষ কিছু করণীয় এবং বর্জনীয় রয়েছে। এই ব্লগে আমরা আলোচনা করবো জুমার দিনের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো এবং কোন কোন কাজগুলো এড়িয়ে চলা উচিত।
জুমার দিনের গুরুত্ব
জুমার দিনকে "সপ্তাহের ঈদ" বলা হয়। এই দিনটি মুসলিম উম্মাহর জন্য অত্যন্ত মহিমান্বিত। পবিত্র কুরআনে এবং হাদিসে জুমার দিনের বিশেষ ফজিলতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। জুমার দিনে বিশেষ কিছু আমল বা কাজ করা সুন্নত হিসেবে গণ্য করা হয় এবং এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের গুনাহ থেকে মুক্তির একটি বিশাল সুযোগ।
জুমার দিনের করণীয় সমূহ
১. গোসল করা: জুমার দিনে গোসল করা একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করবে, তার গুনাহ মাফ হবে।"
২. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা: এই দিনটিতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা এবং ভালো পোশাক পরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি আল্লাহর প্রতি ভক্তি প্রদর্শনের একটি রূপ।
৩. সুরমা লাগানো ও সুগন্ধি ব্যবহার করা: এটি রাসূলুল্লাহ (সা.) এর একটি সুন্নত। সুরমা লাগানো এবং সুগন্ধি ব্যবহার করার মাধ্যমে একজন মুমিন মুসলমান নিজের পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে পারেন।
৪. নখ এবং অবাঞ্ছিত লোম কাটা: সপ্তাহের এই দিনটি নখ কাটা এবং অবাঞ্ছিত লোম কেটে ফেলার জন্য উপযুক্ত।
৫. জুমার নামাজ আদায় করা: এটি জুমার দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। জুমার নামাজ একান্ত ফরজ এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন, “যখন জুমার নামাজের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের জন্য দ্রুত যাও।” (সূরা আল-জুমা: ৯)
৬. সুরা কাহফ পাঠ করা: জুমার দিন সুরা কাহফ পাঠ করলে আল্লাহ তা'আলা তাকে এক সপ্তাহ পর্যন্ত শয়তানের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করবেন।
৭. দুরুদ পাঠ করা: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "জুমার দিনে এবং রাতে আমার উপর বেশি বেশি দুরুদ পাঠ করো।" দুরুদ পাঠ করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ এবং এর মাধ্যমে আল্লাহর রহমত লাভ করা যায়।
৮. দোয়া করা: জুমার দিনে এমন একটি বিশেষ সময় আছে যখন আল্লাহ বান্দার দোয়া কবুল করেন। তাই এই দিনে বেশি বেশি দোয়া করা উচিত।
জুমার দিনের বর্জনীয় সমূহ
১. জুমার নামাজ ফেলে রাখা: জুমার নামাজ ফেলে রাখা মারাত্মক গুনাহ। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "যে ব্যক্তি তিনটি জুমার নামাজ ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দেয়, তার অন্তর মোহর মেরে দেওয়া হয়।"
২. শব্দ করে কথা বলা ও হাসাহাসি করা: জুমার খুতবা চলাকালীন শব্দ করে কথা বলা এবং হাসাহাসি করা নিষিদ্ধ। খুতবা শোনার সময় সম্পূর্ণ মনোযোগ দেওয়া উচিত।
৩. অন্যমনস্ক থাকা: জুমার নামাজ বা খুতবার সময় মনোযোগ না দিয়ে অন্য চিন্তা করা উচিত নয়। আল্লাহর স্মরণ এবং নামাজের প্রতি সম্পূর্ণ মনোযোগ থাকা জরুরি।
৪. অযথা সময় নষ্ট করা: জুমার দিন অন্যান্য সাধারণ দিনের মত নয়। এই দিনে অযথা সময় নষ্ট করা থেকে বিরত থাকা উচিত এবং আল্লাহর ইবাদতে সময় ব্যয় করা উচিত।
সোর্স
উপসংহার
জুমার দিনটি মুসলমানদের জন্য বিশেষ ফজিলত ও বরকতময় একটি দিন। তাই আমাদের সকলের উচিত এই দিনের করণীয়গুলো পালন করা এবং বর্জনীয় কাজগুলো থেকে বিরত থাকা। আল্লাহ আমাদের সবাইকে জুমার দিনের মহিমা উপলব্ধি করে এর আমলগুলো যথাযথভাবে পালন করার তৌফিক দান করুন। আমিন।
ধন্যবাদ আজকের আর্টিকেল পড়ার জন্য।
Telegram and Whatsapp