যদি পৃথিবী পরিবর্তন করতে চাও, তাহলে আগে নিজের ঘর থেকে শুরু কর
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
প্রিয় পাঠক! আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। কেমন আছেন সবাই আশা করি আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়া এবং আল্লাহর অসীম রহমতে ভালো আছি। আজকের আলোচনা "যদি পৃথিবী পরিবর্তন করতে চাও, তাহলে আগে নিজের ঘর থেকে শুরু কর" নিয়ে।
আমরা সবাই চাই পৃথিবীকে আরও শান্তিপূর্ণ এবং উন্নত সুন্দর স্থানে রূপান্তর করতে সমাজে অবিচার সমস্যা এবং বৈষম্য দেখে অনেকেই পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখেন কিন্তু একটি সাধারণ সত্য হলো যে, পৃথিবীকে পরিবর্তন করতে চাইলে প্রথমে আমাদের নিজেদের ঘর থেকেই সেই বদলানোর সূচনা করতে হবে।
কেন আপন ঘর থেকে শুরু করা জরুরি?
প্রত্যেক ব্যক্তি সমাজের একটি অংশ এবং সমাজের ভিত্তি হলো পরিবার তবে তা ধীরে ধীরে সমাজে এবং বৃহত্তর বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে এতে কোন সন্দেহ নাই যদি পরিবারের প্রতিটি সদস্য নিজেদের ব্যক্তিগত জীবনে উন্নতি আনে তাদের আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন আনে।
১. ব্যক্তিগত উন্নতি:
পরিবর্তন শুরু করতে হলে আগে নিজের মধ্যে পরিবর্তন আনতে হবে আমাদের নিজস্ব মানসিকতা, মূল্যবোধগুলোকে এবং আচরণ আগে সংশোধন করা দরকার। উদাহরণস্বরূপ- যদি আমরা অন্যদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে চাই তাহলে প্রথমে আমাদের নিজেদের পরিবারের প্রতি সহানুভূতি দেখাতে হবে এই ক্ষুদ্র বা ছোট পরিবর্তনগুলোই ভবিষ্যতে বড় পরিবর্তনের ভিত্তি গড়ে তোলে।
২. পরিবার হলো সমাজের মূল ইউনিট:
প্রত্যেক পরিবার একটি ক্ষুদ্র সমাজ যদি আমরা নিজেদের পরিবারের মধ্যে সদাচরণ,মূল্যবোধ এবং যা আমাদের ঘর থেকে যদি নৈতিক শিক্ষার প্রচলন আরম্ভ হয় তাহলে তা সমাজকে শৃঙ্খলাবদ্ধ এবং নৈতিকতা স্থাপন করতে পারি তবে তা সমাজের অন্য অংশে ছড়িয়ে যাবে সুশৃঙ্খল করতে সহায়ক হবে।
৩. উদাহরণ সৃষ্টি করা:
আপনি যখন আপনার ঘর থেকে একটি ছোট্ট ভালো কাজ আরম্ভ করেন তখন তা অন্যদের জন্য উদাহরণ হয়ে দাঁড়ায় যা মানুষ দেখতে পায় যে এই ধরনের ইতিবাচক উদাহরণ সমাজের অন্যদের অনুপ্রাণিত করে এবং ছোট ছোট পদক্ষেপ কীভাবে বড় ফলাফল তৈরি করতে পারে তাদের সবার পরিবর্তন আনতে উৎসাহিত করে।
পরিবর্তনের কিছু ধাপ:
প্রথমেই নিজেকে জানতে হবে যে, কোন কোন ক্ষেত্রে আপনি উন্নতি করতে পারেন এবং সেখান থেকেই আরম্ভ করতে হবে পরিবর্তন করতে হলে ছোট ছোট বা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
১. আত্মপর্যালোচনা:
আমরা কোথায় ভুল করছি, বা কোথায় আরও উন্নতি করা সম্ভব, তা খুঁজে বের করে সেগুলো সংশোধন করতে হবে প্রথমে নিজেদের মানসিকতা, আচরণ ও দৃষ্টিভঙ্গি পর্যালোচনা করা দরকার আমরা কোথায় ভুল করছি, বা কোথায় আরও উন্নতি করা সম্ভব, তা খুঁজে বের করে সেগুলো সংশোধন করতে হবে।
২. পারিবারিক সংলাপ:
যেখানে সমস্যা সমাধানে একসঙ্গে কাজ করতে পারে এবং সবাই নিজেদের মতামত বা পরামর্শ দিতে পারে পরিবারের মধ্যে একটি খোলামেলা পরিবেশ তৈরি করুন যা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা বা কথাবাত্রা করুন।
৩. ইতিবাচক আচরণ:
পরিবারে একটি সুশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি হলে তা সমাজে গড়ে ওঠা অনাচার বা কুসংস্কার দূর করতে সাহায্য করবে এসব মূল্যবোধ আগে নিজেদের পরিবারে অনুশীলন বা চর্চা করতে হবে নম্রতা, সহমর্মিতা, সৎ জীবন-যাপন করতে হবে ।
৪. সমাজে যোগদান:
সমাজসেবামূলক কাজের মাধ্যমে আপনি অন্যদেরও ইতিবাচক কাজে উদ্বুদ্ধ করতে পারবেন যখন পরিবারে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটে তখন সেটা বাইরে সম্প্রদায় বা সমাজের কাজে যোগদান করে আরও বড় আকারে ছড়িয়ে দিতে হবে ।
সোর্স
শেষ কথা:
বিশ্বের বড় সমস্যাগুলোর সমাধান সবসময় বড় উদ্যোগের মাধ্যমে আসবে না কারণ অনেক সময় ছোট ছোট পরিবর্তন বিশেষত নিজের ঘর থেকে শুরু করা পরিবর্তন পৃথিবীতে সত্যিকার পরিবর্তন আনতে পারে। সুতরাং, সমাজ এবং পৃথিবীকে পরিবর্তনের আগে নিজেকে এবং নিজের পরিবারকে বদলানো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
ধন্যবাদ আজকের আর্টিকেল পড়ার জন্য।