পর্যবেক্ষণের নেশায় রোমুলাস ঘুরতেন পালনি পাহাড়ের শোলার জঙ্গলে। কৌতূহলে সংগ্রহ করতেন নানা ধরনের পোকামাকড় ও গিরগিটি । প্রায়ই তাকে দেখা যেত ঝোপেঝাড়ে ঘুরে বেড়াতে। এ ব্যাপারে সবচাইতে উৎসাহ পেতেন পাখি বিজ্ঞানী সালিম আলির কাছে । ১৯৬৫ সাল থেকে রোমুলাস পুরোপুরি লেগে গেলেন সাপের বিষ সংগ্রহের কাজে।
সাপের বিষদাঁত ভেঙ্গে নিপুণভাবে বিষ সংগ্রহের কাজটি শিখেছিলেন বিল হাস্টের কাছ থেকে। বিলকে সবাই এক ডাকে বিষধর মানুষ বলে চিনত। পৃথিবীর সব রকমের বিষধর সাপের বিষ তিনি অনায়াসে সংগ্রহ করতে পারতেন। এক গ্রাম সাপের বিষ সংগ্রহের জন্য দরকার তিনশ ভাইপার সাপের। এই বিষ দিয়ে তৈরি হয় বিভিন্ন জটিল রোগের ঔষধ । প্রথমে হাত দিয়ে সাপের মাথা চেপে ধরতে হয়। তারপর মুখ হাঁ করিয়ে খুব সাবধানে সাপের গ্রন্থির উপর চাপ দিতে হয়। বিষ সংগ্রহ করতে হয় একটি কাচের পাত্রে।
রোমুলাস কাজ করতেন মাদ্রাজের ইরুলা উপজাতির সাথে । ইরুলারা হলো বিভিন্ন প্রজাতির সাপ ধরার ব্যাপারে দক্ষ। এ ধরনের কাজে তাদের কোনো বিকল্প নেই। ইরুলাদের মতো এত দুঃসাহসিকভাবে এরকম ভয়ঙ্কর সাপ আর কেউ ধরতে পারে না। রোমুলাস ইরুলাদের সাথে মিশে জঙ্গলে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন প্রজাতির সরীসৃপ সংগ্রহ করতে লাগলেন। সবচাইতে বেশি উত্তেজনা অনুভব করতেন বৃষ্টিঝরা জঙ্গল থেকে সাপ ধরার সময়। সেখানকার ভয়ঙ্কর শঙ্খচূড় সাপ ধরতেন। সাপ ধরতে গিয়ে তার নানা ধরনের বিচিত্র অভিজ্ঞতা হয়েছে। একবার গিয়েছেন আন্দামানে কুমিরের ডিম সংগ্রহের জন্য। লোনা গাছের জঙ্গলে পেলেন একটি কুমিরের বাসার সন্ধান। সেখানে রয়েছে বেশ কিছু ডিম। মা কুমির ছিল না আশেপাশে। সেখান থেকে পঞ্চাশটি ডিম সংগ্রহ করলেন। মাদ্রাজের খামারে এনে ডিম ফুটিয়ে দেখলেন তার মধ্যে রযেছে কয়েক প্রজাতির কাছিম । যার মধ্যে বেশ কয়েকটির অস্তিত্ব বিপন্ন । বাটাচামকা নামের এক বিরল প্রজাতির কাছিম ছিল। এই ধরনের কাছিমের বংশবৃদ্ধির চেষ্টা চলছে। সংগ্রহ করা হচ্ছে ডিম।