ব্যাঙ খুব প্রাচীন প্রাণি । স্ত্রী ব্যাঙ বছরে চার হাজার থেকে আট হাজার ডিমসহ জেলীর মতো দুটি থলি পানির ভেতরে প্রসব করে রেখে আসে। এই থলি দুটি পানির নিচে কাদা আর শেওলার ভেতরে গিয়ে আশ্রয় নেয়। এভাবে অন্য জীবের আক্রমণ থেকে রক্ষা পায়। জেলীর থলি থেকে কয়েক দিনের মাঝেই ছোট ছোট ব্যাঙাচির আবির্ভাব ঘটে।
ব্যাঙাচির জীবন ৬০ থেকে ৬৫ দিন। তারপর সে ডাঙার দিকে যায়। বেশ জোরে লাফিয়ে চলে। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেছেন, এদের পেছনের পায়ের মাংসপেশির এত শক্তি যে, এক লাফে সে তার দেহের মাপের কুড়ি গুণ দূরে যায়।
আকাশে মেঘ জমলে, ঝমঝম করে বৃষ্টি নামলে ব্যাঙ শিশুরা ঘাসের নিচ থেকে, গর্তের ভেতর থেকে, পাতার আড়াল থেকে বেরিয়ে আসে। বৃষ্টির ধারা এদের আলোড়িত করে। এরা সমবেতভাবে ডাকতে থাকে। এ সময় পাখিরা এসে তাদের খেয়ে ফেলে।
ব্যাঙের গলার ভেতরে একটি নরম চামড়ার থলি আছে। সেটি বেলুনের মতো ফুলে উঠতে পারে। বাতাস ভরলেই এ থেকে শব্দ হয়।
ব্যাঙ তার চামড়ার ভেতর দিয়ে পানি শুষে নেয়। কোনো জীবকে আক্রমণ করার সময় মুখ খুলে আঠালো জিভ দিয়ে চট করে আহার্যকে চেটে মুখে নেয়। ফসলের শত্রু পোকামাকড় খেয়ে ব্যাঙ চাষিদের অনেক উপকার করে। গরমের সময় তিন মাসের ভেতর এক একটি ব্যাঙ দশ হাজার কীটপতঙ্গ খেয়ে থাকে।
দক্ষিণ আমেরিকায় এক ধরনের রাক্ষুসে ব্যাঙ দেখা যায়। এরা সবজি ক্ষেতে লুকিয়ে থাকে। নিজের দেহের চাইতে তিনগুণ বড় প্রাণির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। সাপ, গিরগিটি, বাদুড় খায় । শিকারের মাথা চোয়ালের মধ্যে ঢুকিয়ে ফেলে।
ব্যাঙ বাতাস পান করে। বাইরে থেকে বাতাস পাম্প করে নিয়ে যায় হৃৎপিণ্ডে । ধীরে ধীরে ভেতরে বাতাস টেনে অনেক সময় সে একটি মস্ত বলের মতো ফুঠে ওঠে। সরু চোয়ালের সাপ যদি ব্যাঙকে গেলার চেষ্টা করে তখন ব্যাঙ এভাবে নিজেকে ফুলিয়ে রক্ষা