পরিবেশ বিজ্ঞানের একটি শাখা হলো বীজ বিস্তারের নানা কৌশল নিয়ে গবেষণা। বহু ভাবে বীজ ছড়িয়ে যায়। পানিতে ভেসে, বাতাসে উড়ে, জীবজন্তুর গায়ে আটকে। নানাভাবে বীজ দূরে গিয়ে অঙ্কুরিত হয়।
নরওয়ের পাইনগাছের বীজ বাতাসে উড়ে গিয়ে পৌঁছায় স্কটল্যান্ডে । পুরো উত্তর সমুদ্রের ওপর দিয়ে ভেসে যায় বীজ । প্রায় ৭০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হয়।
আফ্রিকার কিছু অঞ্চলে হাতির মলের সাথে গাছের বীজ অঙ্কুরিত হয়ে দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়ে। উগান্ডা, জায়েরে আর জিম্বাবুয়ের বনভূমিতে এ ধারা দেখা যায়। এভাবে হাতিরা গাছের উপকার করছে। পশ্চিম আফ্রিকায় তাই অরণ্যের ৩৭ প্রজাতির দ্বিবীজপত্রী হাতির সাহায্যেই বংশবিস্তার করছে।
উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের মতে সবীজ ফার্ণ হচ্ছে পৃথিবীর প্রথম সপুষ্পক উদ্ভিদ। এ পর্যন্ত উদ্ভিদের যত ফসিল পাওয়া গেছে তার মাঝে সবীজ ফার্ণের পাতাটিই ২৫ কোটি বছরের পুরানো।
পৃথিবীর বৃহত্তম উদ্ভিদের নাম আমাজানের পদ্ম । দেখতে বিশাল থালার মতো। এই পাতার ওপর একটি শিশুকে বসিয়ে রাখা যেতে পারে।
১৮০১ খ্রিস্টাব্দে উদ্ভিদবিজ্ঞানী হ্যানকে বলিভিয়াতে প্রথম এই আশ্চর্য ধরনের উদ্ভিদটি আবিষ্কার করেন। ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দে পোপেগ দক্ষিণ আমেরিকার আমাজান নদীতে এই অতিকায় উদ্ভিদটি দেখতে পান। তিনি এর নামকরণ করেন। এর চারা নিয়ে যাওয়া হয় লন্ডনের কিউ উদ্যানে। বারো বছরের চেষ্টার পর ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে প্রথম এর ফুল ফোটে। এ উপলক্ষে বিরাট অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মহারানি ভিক্টোরিয়াকে উপহার দেওয়া হয় আমাজান লিলি।
১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে ভারতবর্ষে এর বীজ এনে অঙ্কুরোদগম করা হয়। এই উদ্ভিদের পাতার ব্যাস ৫ থেকে ৭ ফুট পর্যন্ত হয়। পাতাগুলো পানির ওপর ভাসমান অবস্থায় থাকে। পাতার ওপরের দিক ঘন সবুজ । তৈলাক্ত। এর ফলে পাতার ওপর পানি জমতে পারে না ।