থিওরি অফ রিলেটিভিটির প্রবক্তা বিশ্বনন্দিত বিজ্ঞানী আইন্সটাইন ১৯০৫ ও ১৯১৫ সালে দুটি আলাদা আলাদা পেপারে আপেক্ষিকতাবাদের মূল তত্ত্বগুলি প্রকাশ করেন। ১৯০৫ সালে প্রকাশিত পেপারটির মূল বক্তব্যকে বলা হয় স্পেশাল থিওরি অফ রিলেটিভিটি আর ১৯১৫ সালে প্রকাশিত পেপারটির মূল বক্তব্য হল জেনারেল থিওরি অফ রিলেটিভিটি।
স্পেশাল থিওরি অফ রিলেটিভিটিতে আইন্সটাইন স্পেস-টাইম কন্টিনিউয়ামের কথা আলোচনা করেছেন আর তার ঠিক দশ বছর পরে প্রকাশিত জেনারেল থিওরি অফ রিলেটিভিটিতে এই স্পেস- টাইম কন্টিনিউয়ামের উপর মহাকর্ষ বলের প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
স্পেস-টাইম কন্টিনিউয়ামের মানে কি জানতে হলে ক্লাসিক্যাল ফিজিক্সের ধারণাকে আপনাকে প্রথমেই ত্যাগ করতে হবে অর্থাৎ কিনা ত্রিমাত্রিক ধারণার বদলে চতুর্মাত্রিক ধারণার আমদানি করতে হবে। আমরা আমাদের চারপাশের যে সব বস্তু দেখতে পাই সবই ত্রিমাত্রিক অর্থাৎ কিনা তাদের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা আছে।কিন্তু একটা ব্যপার আমরা খেয়াল করি না যে সময় ও প্রতিটি বস্তুর আরেকটি মাত্রা।আমরা প্রাণীজগত সময়ের অধীনে ছোট থেকে বড় তারপর বুড়ো হই।একটি গাছ একটি বীজ থেকে মহীরূহতে পরিণত হয়।এসব ক্ষেত্রে আমরা সময়ের প্রভাব খুব সহজেই লক্ষ্য করতে পারি।এবার সেই ধারণা নিয়েই আসুন প্রতিটা বস্তুতে সময়কে একটি মাত্রা হিসাবে যোগ করি। আইন্সটাইনের মত করে ভাবতে হলে একটা ছোট্ট উদাহরণ দিই। রাস্তায় চলতে চলতে নিজেদের ছায়া আমরা সবাই দেখি। এই ছায়ার দৈর্ঘ্য আছে, প্রস্থও আছে কিন্তু উচ্চতা কি আছে? না নেই, ছায়ার উচ্চতা নেই। সুতরাং ছায়া হল একটি দ্বিমাত্রিক অস্তিত্ব। ত্রিমাত্রিক আমার প্রোজেকশন হল দ্বিমাত্রিক একটি তলে আর তৈরি হল ছায়া যা দ্বিমাত্রিক। সে ভাবেই আমরা বলতে পারি চতুর্মাত্রিক আমার ত্রিমাত্রিক একটি তলে প্রোজেকশনে যে ছায়া সেটাই হলাম এই মূহুর্তের আমি।
ছোটবেলায় যখন রাস্তা দিয়ে হাঁটতাম তখন দেখতাম ছায়াটা রাস্তার আলো থেকে দূরে গেলে বড় হয় আর আলোর কাছে এলে ছোট হয়ে যায়। অর্থাৎ কিনা ছায়ার কোন নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্য বা প্রস্থ নেই। তেমনই আমার ত্রিমাত্রিক ছায়ারও চতুর্মাত্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্য, প্রস্থ বা উচ্চতা নেই।তা নির্ভর করছে চতুর্মাত্রিক তলে আমার অবস্থানের উপর।এই চতুর্মাত্রিক তলই হল স্পেস-টাইম কন্টিনিউয়াম। নীচের ছবিটিতে স্পেস-টাইম কন্টিনিউয়ামের একটি ধারণা দেওয়া হল।()
©সৃজনী চক্রবর্তী / Srijani Chakraborty