Rat Race তথা ইঁদুর দৌড়

images (227).jpeg
Photo Source

🤔 আমাদের জীবন যেন এক প্রতিযোগিতাময়। ধন-সম্পদের প্রতিযোগিতা, টাকা-পয়সার প্রতিযোগিতা, গাড়ি-বাড়ির প্রতিযোগিতা। কে কার থেকে বেশি টাকা আয় করবে, কে কার থেকে বেশি সম্পদের মালিক হবে, এই অসুস্থ প্রতিযোগিতা নিয়ে আমরা ব্যস্ত। অমুকের ছেলে পরীক্ষায় প্রথম হয়েছে আমার ছেলে কেন হল না, অমুক ব্যক্তি আমার থেকে বেশি টাকা রোজগার করে আমি কেন পারিনা, অমুক কলিগ প্রমোশন পেয়ে ওপরে উঠে যাচ্ছে, আমি কেন প্রমোশন পাচ্ছিনা 😔। মোটকথা হলো, এই কর্পোরেট দুনিয়ায় আমরা একটা "Rat Race" তথা "ইঁদুর দৌড়ের" মধ্যে জীবন অতিবাহিত করছি।
😲 নিজেদের জীবনের দিকে তাকালে আমরা লক্ষ্য করবো, আমাদের জীবনটা কোনোনা-কোনোভাবে "Rat Race" এর আওতায় পড়ে গেছে। আমাদের টাকা চাই, অনেক টাকা। সেই টাকার পিছনে আমরা অবিরাম ছুটে চলি। আমি বিসিএস ক্যাডার কেন হব? কারন আমার একটা সরকারি চাকরি চাই। সরকারি চাকরি হলেই আমরা ধরে নিতে পারি আমাদের জীবনের নিরাপত্তা অনেকটা নিশ্চিত। ভালো স্কেলের স্যালারি, ভালো সুযোগ-সুবিধা, ভালো ব্র্যান্ডের গাড়ি পাওয়া যাবে। আবার অনেকেই ভালো পড়াশোনা করে, কারণ তাকে বিসিএস ক্যাডার হতে হবে। তার কাছে বিসিএস ক্যাডার মানেই জীবন, জীবন মানেই বিসিএস ক্যাডার হওয়া। জীবনের এই প্রবণতাটাই হলো এক ধরনের "Rat Race". 😫
আবার সরকারি চাকরি পেয়ে গেলে তখন পেরেশানি থাকে প্রমোশন নিয়ে। আমার পাশের ব্যক্তি প্রমোশন পেয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু কোনোভাবেই ব্যাপারটা আমি মেনে নিতে পারছি না 😤। কারণ আমাকেও প্রমোশন পেতে হবে। এই প্রমোশন পাওয়ার জন্য আমার যত ধরনের কাজ করা দরকার আমি করতে প্রস্তুত। যদি বসের তোষামোদি করা লাগে করব, ঘুষ দিতে হলে দিব। তার বিনিময়ে শুধু প্রমোশন চাই ☺️। আবার যখন ঠিকই প্রমোশন হয়ে যাবে, তখন অন্য আরেকজনের সাথে নিজেকে তুলনা করে আবার আরেকটা অসুস্থ প্রতিযোগিতায় আমরা নেমে পড়ি।
🧐 আমাদের দেখলে মনে হবে আমাদের জীবনটা শুধুমাত্র প্রতিযোগিতা অথবা অন্যের দাসত্ব করার জন্য পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে। কেউ টাকার দাস হয়ে পড়ি। কেউবা স্ত্রীর, সন্তান-সন্ততির দাস হয়ে পড়ি। আবার কেউবা ধন-সম্পদের দাস হয়ে পড়ি। অথচ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলেছেন,

    "আমি মানুষ ও জিন সৃষ্টি করেছি শুধুমাত্র আমার ইবাদত তথা দাসত্ব করার জন্য।
             ( সূরা যারিয়াত, আয়াতঃ 56)

 দেখুন কুরআন আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য বলে দিচ্ছে।  কিন্তু আমরা কয়জন এই উদ্দেশ্য পুরোপুরিভাবে পালন করছি। আমাদের জীবন কোন না কোনভাবে এই দাসত্বের সাথে জড়িত।  তাহলে একটা বার ভেবে দেখুন, দাসত্ব যদি করতেই হয় তাহলে মহান রবের দাসত্ব করার মতো সর্বশ্রেষ্ঠ কাজ করা কি আমাদের উচিত নয়?  কিভাবে আমরা আল্লাহর দাসত্ব করা ভুলে গিয়ে পুরোপুরিভাবে দুনিয়ামুখি হয়ে পড়ছি 🥺?  মোটকথা হলো, শয়তান আমাদের চোখে দুনিয়ার মোহ, লোভ-লালসা এমন ভাবে তুলে ধরেছে যেন আমরা আখেরাতকে ভুলে যেতে পারি 😷।  অথচ যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন সেই মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার কাছে  দুনিয়া, আখেরাতের তুলনায় তুচ্ছ নগণ্য একটি বস্তু ছাড়া আর কিছুই নয়।
         😊 তাই আসুন আমাদের বেঁচে থাকার জন্য দুনিয়ার প্রয়োজন যতটুকু, ততটুকু পূরণ করে বাকিটা সময় আখেরাতের জন্য ব্যয় করি।  আমি আমাকে সহ যত মুসলমান ব্যক্তি আছে সবার জন্য দোয়া করি, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা যেন আমাদের অন্তর থেকে দুনিয়ার লোভ লালসা দূর করে দিয়ে আখেরাতমুখী করে দেন।

(আমিন)