1979 সালের 1লা জানুয়ারী বালংদেশের নোয়াখালী জেলার সেনবাগ থানার একটি ছোট্ট (ঠনারপাড়) গ্রামে আমার জন্ম। সেখানে ছোট বেলা কাটে আমার 6 ভাই বোনের মধ্যে আমি সবার আদরের ছোট ভাই। তার মধ্যে সবার ছোট হওয়াতে সবার আলাদা আদরের। বোনদের কলিজার কুটরো আমি। ছোট হওয়াতে বাবারও খুব আদরের ছিলাম। কিন্তু সেটা বেশি দিন স্থায়ী হলোনা। বাবা ছিলেন ব্যাংকার। 1989 সালে 14ই এপ্রিল বাবা লিভার সিরোসিস আক্রান্ত হয়ে মারা যান । সেই থেকেই জীবনের সাথে যুদ্ধ শুরু। বড় ভাই তখন মাত্র মাধ্যমি পাশ করেছেন। বাকী তিন বোনই বড়। বাবার ব্যাংকিং কাজের সততার কারনে কর্তৃপক্ষ বড় ভাইকে চাকুরী দেয়ার ঘোষনা করেন।কথা মত কাজ।বড় ভাইয়ের পুষ্টিং হয় নোয়াখালী জেলা শহরে।এর কিছু দিন পর বড় ভাই আমাকে নোয়াখালী জিলা স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। দুই ভাই এক সাথে মেচে থাকি আমি তখন সপ্তম শ্রেণিতে।1995 সালে মাধ্যমিক পাশ করি।
এর মধ্যে আমার রেজাল্ট দেখে আমার সেজো মামা আমাকে ঢাকায় নিয়ে আসে মামাত ভাই বোনদের পড়াতে এবং মামা কলেজে ভর্তি করিয়ে দেন।এরই মধ্যে আমার সেজে বোনটি ভিষণ অসুস্থ্য হয়ে পড়েন।জামাই বাবু আবার পীর বাবার মুরিদ। বোন যখন প্রায় মৃত্যুর পথ যাত্রী আমার মা আমাকে বলেন তোর বোনকে কি বাঁচাবিনা ?? কিছু না ভেবেই আমার টিউশনির কিছু জমানো টাকা নিয়ে বোনকে ঢাকায় নিয়ে এলাম।এর পরের পরিস্থিতি আর লিখার মত নয়। যাই হোক আল্লাহর অশেষ মেহের বানীতে ঢাকা মেকিকেলে 5 মাস চিকিৎসা করানোর পর বোন সুস্থ্য হয়ে উঠে। যদিও এটি কিডনি অপসারন করতে হয়েছিল।
এর মধ্যে আমি বুয়েটের এক বড় ভাইয়ের পরামর্শে কম্পিউটারের কিছু সর্ট কোর্স করে নেই।
আবার টিউশনির কিছু টাকা জমিয়ে একটি পিসি ক্রয় করি। এর পর শুরু করি টাইপিং কাজ এবং অন্যদের দিতে থাকি প্রশিক্ষন। গড়ে তুলি আই.এস.টি.আই নামের আমার ইনিস্টিটিউট।
কিন্তু আল্লাহ যাকে পচন্দ করেন তাকে নাকি বার বার বিপদ দিয়ে দেখেন।
2001 সালে আমি টিউবারক্লোসিস ম্যানেনজাইটিজ রোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হই। 3 দিন অজ্ঞান থাকার পর রোগ ধরা পড়ল।1 বছরের ঔষধ দিয়ে ডা: বল্লেন গ্রামে গিয়ে থাকতে।কিছু দিন থাকার পর হঠাৎ দেখি আমি বসা থেকে উঠতে পারছি না।আবার ঢাকা মেডিকেল। ধরা পড়ল আমার স্পাইনালকড ইনজুরি। 3 মাস অপেক্ষার পর এক পিজিও থেরাপীষ্ট বন্ধুর সহযোগীতায় সাভার সিআরপিতে ভর্তি হই।
সিআরপিতে 4 মাস চিকিৎসা নেই। সিআরপিতে থাকা অবস্থায় আমাকে কম্পিউটারের হায়ার ট্রেনিং করানো হয়। এবং সার্টিপিকেট প্রদান করে।
তখন সিআরপি থেকে একটি দল পাঠাবে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহনের জন্য।সেই দলে আমিও সিলেক্টেড হই। অর্জন করি স্বর্ণ পদক। ততকালীন প্রধান মন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার হাত থেকে পুরস্কার নেই। চিকিৎসা শেষে গ্রামে ফিরি। কিন্তু আমার আর সোজা হয়ে দাঁড়ানো হলোনা। আমার বাহন হলো হুইল চেয়ার।
ঢেঁকি স্বর্গে গিয়েও নাকি বারা বাঁধে। গ্রামে গিয়েও শুরু করলাম কম্পিউটার প্রশিক্ষন কেন্দ্র। এর মধ্যে জেলা শহরে আমেরিকা ভিত্তিক গ্যাস অনুসন্ধ্যান কোম্পানী (গ্রেন্ট জিওফিজিক্যাল) এর সাথে কাজ করার সুযোগ পেয়ে যাই। 2 বছর সে কোম্পানীর সাথে কাজ করার সুযোগ হয়। এর মধ্যে আবার ফিরলাম ঢাকায়। উত্তরাতে প্রতিষ্ঠা করলাম আবার নিজের আই.এস.টি.আই প্রতিষ্ঠান।
এর মধ্যে বুয়েট থেকে প্রডাক্টিভিটি অব ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল ইন্ড্রাজট্রি প্রোগ্রাম কমপ্লিট করি। ভালই ছলছিল নিজের প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান।শুরু হলো করোনা মহামারী।
কিন্তু আমি থেমে যাইনি।।
উত্তরার প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে চলে আসি পূর্বাচল নিউ টাউনে।
প্রতিষ্ঠা করি আমার সেই প্রতিষ্ঠান । সাথে শুরু করি এজেন্ট ব্যাংকিং (ডাচ্ বাংলা এজেন্ট ব্যাংক)। সময় বলে দিবে সামনে কি দিন অপেক্ষা করছে।
পুরো সময়ে 3 হাজারেরও বেশি স্টুডেন্টকে আমি কম্পিউটার প্রশিক্ষন দিয়েছি।
সব মিলিয়ে আল্লাহকে ধন্যবাদ জানাই তিনিযে আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।
আমি 2011 সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। আমার 8 বছরের একটি রাজ কণ্যা আছে। পরবর্তিত পোষ্টে তুলে ধরবো।
Hi, @mmkamal,
Thank you for your contribution to the Blurt ecosystem.
Please consider voting for the witness @symbionts.
Or delegate to @ecosynthesizer to earn a portion of the curation rewards!