এই বোমাটির নাম ব্যাট-বম্ব বা বাদুড় বোমা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র এটি পরীক্ষামূলকভাবে তৈরি করে। বোমার খোলসের ভেতরে হাজার খানেক প্রকোষ্ঠে শীতনিদ্রায় থাকা বাদুড় (মেক্সিকোর ফ্রি-টেইলড বাদুড়) রাখা হতো।
প্রতিটি বাদুড়ের পিঠে আবার ছোট ছোট আগুনে বোমা যুক্ত করে দেওয়া হতো, যেগুলোতে ডিলে সার্কিট (দেরিতে ট্রিগার করার জন্য) যুক্ত করা থাকত। বোমাটিকে একটি বোমারু বিমান হতে নিক্ষেপ করলে অর্ধেকটা নামার পর প্যারাশুট খুলে খোলস আলাদা হয়ে যেতো এবং বাদুড়ের খোপগুলো উন্মুক্ত হয়ে পড়ত। উষ্ণতায় বাদুড়ের ঘুম ভেঙ্গে যেত এবং এরা ২০ থেকে ৪০ মাইল ব্যাসার্ধের মধ্যে ঘর-বাড়ির ছাদের খাঁজ বা ঘুলঘুলিতে আশ্রয় নিত।
জাপানী কাঠের বাড়িগুলোকে লক্ষ্য করেই এই বোমার নকশা করা হয়। বাদুড়ের পিঠে থাকা বোমায় নির্দিষ্ট সময় পরে আগুন ধরে যায় এবং এর মাধ্যমে ঘর-বাড়িতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। বোমা তৈরির পর জাপানী গ্রামের আদলে তৈরি একটি গ্রামে এটি পরীক্ষাও করে দেখা হয়। পরীক্ষায় সন্তোষজনক ফলাফল পাওয়া যায়। তবে এটি যখন তৈরি করা হয়েছিলো তখন পারমাণবিক বোমার গবেষণা দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিল। কর্তৃপক্ষ যখন দেখল এটি ১৯৪৫-এর মাঝামাঝি সময়ের আগে পুরোপুরি যুদ্ধের কাজে লাগানোর মতো করে প্রস্তুত করা যাবে না, তখন এই প্রকল্প বাতিল করে দিয়ে পারমাণবিক বোমার দিকেই পূর্ণ মনোযোগ দেওয়া হয়।
bigganpotrika.com