এভাবে তিলে তিলে ধ্বংস করার চেয়ে একবারে ধ্বংস করে দিন তাই ভালো হবে

in education •  3 years ago 

বাংলাদেশ নামক দেশের আমি একজন বাসিন্দা পাশাপাশি একজন ছাত্র, যদিও বর্তমানে বলা ভালো অপাত্র।বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার বলির পাঠা আমি/আমরা।বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে আমার পড়াশোনা, দেশের সরকারি অর্থাৎ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার পড়ালেখা। কথা হলো ২০২০ সাল থেকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও করোনাে নামক জঘন্যতম শত্রুর সাথে লড়ছে।যার প্রভাব শিক্ষা ক্ষেত্রে ফেলছে সংশ্লিষ্টরা।২০২০ সালে যখন করোনা তার খেলা দেখানো শুরু করলো তখন ৩১ শে মার্চ সরকার দেশের বহু প্রতিষ্ঠানের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে।এরপর ধীরে ধীরে করোনার প্রকোপ বিবেচনা সাপেক্ষে দেশের সকল কলকারখানা, গার্মেন্টস, পর্যটনকেন্দ্র সব সচল হয়ে যায়।খোলার বিভিন্ন তারিখ ঘোষণা দিয়েও বন্ধ থাকে দিনের পর দিন।প্রায় ৫৫৪ দিন বা দেড় বছর পর ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর খুলে দেয় স্কুল কলেজ তবুও সেটা এক নাটকীয় রুপে।

NuNu.jpg

স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় সমুহে সপ্তাহে একদিন ক্লাস,একেক দিন একেক শ্রেণীর জন্য বরাদ্দ,যেমন শনিবারে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ক্লাস হলে রবিবার ৭ম এর বাকী ৫ দিন বন্ধই, সপ্তাহে ১ দিন ক্লাস করে কতটুকুই বা পড়া আয়ত্ত সম্ভব।
এছাড়া অটোপাশ নামক হাস্যকর অধ্যায়ও দেখেছে বাংলাদেশ।বর্তমানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে প্রচুর সেশনজট,তদ্রূপ সকল শিক্ষা স্তরেই রয়েছে জটলা।যখনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সহ সকল বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজ স্কুল মোটামুটি হারে স্বাভাবিক হতে শুরু করলো তখনি আবারো করোনার ওমিক্রন ভার্সন বাড়ার ফলে আজ ২১ শে জানুয়ারি,২০২২ সব(ক্লাস/পরীক্ষা) স্থগিত করে দিয়েছে আপাতত ১৫ দিনের জন্য।তবে নিশ্চিত থাকুন এই মেয়াদ বাড়বে।আজকের এই জটের জন্য দায়ী কর্তৃপক্ষ। কেননা তারা যদি যেদিন থেকে গার্মেন্টস সহ সকল পর্যটন কেন্দ্র খুলে দিয়েছিল সেদিন থেকে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিত তবে এতদিনে অনেক পরীক্ষা শেষ হয়ে অনেকে বিশ্ববিদ্যালয় হতে বের হয়ে যেতে পারতো, জটলা বাধতো না,কেন সব কিছু ২-৩ মাসের মধ্যে সচল করলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সচল করলেন না,কেন সবকিছু স্বাভাবিক করার ১৫ মাস পর শিক্ষাক্ষেত্র নাম মাত্র খুললেন,আমরা শিক্ষার্থীরা কি গার্মেন্টস কর্মীদের চেয়ে অসচেতন নাকি?যেখানে সব খুলে দেবার পর দেশের কোন কোন প্রতিষ্ঠানে কয়জন কর্মকর্তা, কতজন শ্রমিক আক্রান্ত হয়েছে বা মারা গিয়েছে?আসলে শিক্ষার্থীদের জীবন নস্ট হলে বা তাদের ভবিষ্যৎ পেছালে সংশ্লিষ্টদের কি! তারা তো একটা পর্যায়ে রয়েছে, তাদের কোন চিন্তা নাই,চিন্তা যত সব বাবা মা আর হতভাগা শিক্ষার্থীদের।আমি ২০১৭-১৮ সেশনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রফেশনাল অনার্স কোর্সে ভর্তি হই আমার কোর্স শেষ হবার কথা ছিলো ২০২১-২২ সেশনে তবে বর্তমানে আমি মাত্র ৪র্থ সেমিস্টার শেষ করে ৫ম সেমিস্টার এর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। সামনের ১৩ ফেব্রুয়ারি ১ম পরীক্ষা হবার কথা ছিলো তবে বেশিরভাগ মনে হচ্ছে হয়ত সেটা সম্ভব হবে না।তারমানে কোর্স শেষ করে কবে নাগাত বি্শ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করবো তার কোন হদিসই নেই।তেমনি আমার মতো হাজার লাখ শিক্ষার্থী দেশে বিভিন্ন স্তরে আজ অসহায়। তারা পারিবারিক সামাজিক আত্মিক চাপে জর্জরিত। যারা আইন করেন, বন্ধ খোলার সিদ্ধান্ত নেন তারা ভেবে দেখবেন আমাদের ভবিষ্যৎ কোন দিকে যাচ্ছে।আর ২০২২ শুরু করলো করোনার বন্ধ দিয়ে হয়ত ২২ সালটা এভাবে খুলবে- বন্ধ করবে, ২০২৩ সালে আবার আমাদের দেশের জাতীয় নির্বাচন,দেশের দুটি বৃহত্তম দল যেহেতু নির্বাচন ব্যবস্থায় মুখোমুখি অবস্থানে তাই চোখ বন্ধ করে বলা যায় ২০২৩ সাল হতে পারে সংঘাতের বছর, পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে পারে,ঘুরেফিরে হয়তো আবার পেছাবে আমাদের জীবন।আল্লাহ পাকের উপর তাই সব ভরসা করে আমি আজ নির্বিকার দর্শক।

NUNU.jpg

সত্যিই এই শিক্ষা শিক্ষা খেলার গুটি আমরা। এভাবে তিলে তিলে নাটকীয়তায় বসে বসে পরিবার সমাজ এবং নিজের কাছে প্রতিনিয়ত অভিশপ্ত হওয়া হয়ত করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত হবার চেয়ে বেশি কস্টদায়ক।

এর থেকে মুক্তি চাই!পাবো কি মুক্তি নাকি সবকিছু আগের মতোই চলতে থাকবে।

©®কামরুল হাসান সিফাত।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE BLURT!