হাবুর সামনে এস এস সি নির্বাচনী পরীক্ষা। কিন্তু সে কোন ভাবেই পড়াশোনায় মন বসাতে পারছে না। পড়ার টেবিলে পড়তে বসলেই, মনের মধ্যে কেমন যেন অশান্তি বিরাজ করে। তাই সে মাঝেমধ্যে ভাবে এইবার বোধহয় এস. এস. সি. পরীক্ষা দেওয়া হবে না! তাই সে সবসময় হীনমন্যতায় ভোগে।
হাবুর এই অবস্থা দেখে তার এক দাদি তার মাকে পরামর্শ দিল, একজন কবিরাজের কাছে নিয়ে যেতে। কবিরাজ অনেক ভালো। যেকোনো রোগের চিকিৎসা করে থাকেন। মানসিক এবং শারীরিক সকল রোগের চিকিৎসায় মানুষ অনেক উপকার পায়। এমনকি অনেক ক্যান্সারের রোগী ভালো করেছিলেন। তেমনি ভাবে বর্ণনা করলেন হাবুর দাদি।
হাবুর মা হাবুকে জোর করে কবিরাজের কাছে নিয়ে গেল। কবিরাজ ঝাড়-ফুঁক দিয়ে বলল এটা কোন সমস্যা না। ১০১ টাকা হাদিয়া দে! আর তাবিজটা তার গলায় বেঁধে দে। আর এই তাবিজটা ভিজিয়ে তিনবেলা পানি খাবি।
এবার হাবু বাড়ি এসে নিশ্চিন্তে সময় কাটাতে লাগলো। এবার তার পাশ ঠেকায় কে? এবার নিশ্চিন্তে এস. এস. সি. সার্টিফিকেট পেয়ে যাবো! তাই পড়াশোনা একেবারেই ছেড়ে দিল সে। কবিরাজের কথা মতো তিন বেলা পানি খায় , আর তাবিজটি গলায় ঝুলিয়ে রাখল। তাবিজের গুণেই সে পাশ করে যাবে। তাহলে পড়াশোনা কি দরকার?
নির্বাচনী পরীক্ষা চলে এলো। হাবু হাসিমুখে পরীক্ষা দিতে গেল। কিন্তু পরীক্ষার খাতায় কোনো কিছুই লিখল না। সে মনে মনে অনেক খুশি। তাবিজের গুণেই পাশ করবো। খাতায় লিখার প্রয়োজন কি?
তাই সে খালি খাতা জমা দিল। সবাই আশ্চর্য হয়ে গেল।এমনকি শিক্ষকরা তাকে জিজ্ঞেস করল, তুমি খালি খাতা জমা দিছো কেন? নির্বাচনী পরীক্ষায় ফেল করলে তোমাকে এসএসসি পরীক্ষা দিতে দেওয়া হবে না। তুমি কি তা জানো?
সে তার শিক্ষককে বললো আপনারা এই বিষয়ে চিন্তা করিয়েন না। আমি ঠিকই পাশ করে যাবো। সবাই এই কথা শুনে হাবুকে পাগল ভাবতে থাকলো।
এবার নির্বাচনী পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হলো। হাবু হাসি মুখে পরীক্ষার ফলাফল দেখতে গেল। কিন্তু সেখানে তার নামের কোন চিহ্ন ও নেই। সে হতভম্ব হয়ে গেল। তার কোনো রকম বিশ্বাস হচ্ছিল না। রাগে এসে নদীর পাড় বসে রইল। তারপর সে ভাবল, তাবিজে কি আছে দেখা যাক। তাবিজটি খুলল। খুলে দেখল সেখানে একটি কাগজে লেখা আছে,
পড়িলেই পাস করিবে।
তার চোখ কপালে উঠে গেল। তারপর তার মাকে নিয়ে দেখালো। কিন্তু তার মা মানতে নারাজ। তার মা বলল হয়তো তুই ঠিকমতো তাবিজটি পানিতে ভিজিয়ে সেই পানি খাস নি। সেই জন্যই ফেল করেছ।
তারপর হাবু মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করল এবং পরবর্তীতে পাস করল।
আমাদের সমাজে এমন অন্ধবিশ্বাস এবং কুসংস্কার অনেক প্রচলিত আছে। যারা কোন কিছু হলেই বিভিন্ন ভন্ড কবিরাজের বিশ্বাস করেন। কবিরাজের কবলে পড়ে সর্বস্ব হারান। আমি এমনও দেখেছি, যেখানে ডাক্তার বলে দিয়েছে রোগী মারা যাবে। সেখানে কবিরাজ বলেছে সে এই রোগীকে ভালো করতে পারবে। কিন্তু কিছুদিন টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেয়ার পর, ফলাফল শূন্য।
I think we had a small discussion on it in elsewhere. On H platform.