আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা, আশা করি সবাই ভাল আছেন আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি আপনাদের দোয়ায় আজকে আপনাদের মাঝে কিছু সুন্দর মুহূর্তের কথা শেয়ার করব।
সময়ের সাথে সাথে মানুষের জীবনে অনেক পরিবর্তন আসে। একটা সময় ছিল যখন পরিবারের মানুষজন অবসর সময়ে অন্য আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে যেতো। কিন্তু এখন মানুষের অবসর কাটে হয় টেলিভিশন দেখে, না হলে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে গিয়ে, আর না হলে কোন রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া করে। সময়ের সাথে সাথে এই পরিবর্তনগুলো আমাদের জীবনে এসেছে।
আমি যখন আরো ছোট ছিলাম তখন রেস্টুরেন্টে খাওয়ার এত প্রচলন ছিলো না। শুধু বিশেষ অকেশনে আমরা রেস্টুরেন্টে খেতে যেতাম। কিন্তু এখন সে দিন বদলে গিয়েছে। এখন মানুষ কারণে, অকারণে প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে রেস্টুরেন্টে খেতে যায়। এখন আর আমাদের ঘরের খাবার ভালো লাগে না। রেস্টুরেন্টের খাবার সেটা যতো অস্বাস্থ্যকর বা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হোক না কেন। আমাদের কাছে সেটাই ভালো লাগে।
যাইহোক দুদিন আগে পরিবার নিয়ে গিয়েছিলাম একটি রেস্টুরেন্টে দুপুরের লাঞ্চ করতে। অবশ্য শখ করে যাইনি। কয়েকদিন ধরে বাসায় কাজের বুয়া আসে না। যার ফলে রান্নার ঝক্কি ঝামেলা এড়ানোর এবং আমার নানু অসুস্থ,এবং আমার মামা বাসায় আসছে। তাই আমরা জোহরের নামাজের পর রেস্টুরেন্টে যাবো। যার ফলে আমি যখন নামাজ পড়তে যাবো তখন যেন তারা প্রস্তুত হয়ে থাকে। এসে দেখি তারা অনেকটাই তৈরি হয়ে আছে। তারপর অল্প কিছুক্ষণের ভেতরে আমিও তৈরি হয়ে তাদেরকে নিয়ে রেস্টুরেন্ট এর উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
গিয়েছিলাম একটি নতুন রেস্টুরেন্টে। নতুন রেস্টুরেন্টে সেট মেন্যুর একটি অফার চলছিলো। যেহেতু আমাদের বাইরে খেতে হবে তাই আমরা আগে থেকে খোঁজখবর নিয়ে সেই রেস্টুরেন্ট সিলেক্ট করেছিলাম। রেস্টুরেন্টটি একদমই বড়ো না। একদম ছোট্ট একটা রেস্টুরেন্ট। ভেতরে একসাথে ২০ থেকে ৩০ জন লোকের বসার ব্যবস্থা আছে। রেস্টুরেন্টে পৌঁছে দেখলাম সেখানকার বেশিরভাগ টেবিলে লোকজন বসে আছে। তারপর ও আমরা একটি ফাঁকা টেবিল দেখে সেখানে বসে পড়লাম।
![NTy4GV6ooFRkjTArCrebYc2WCCmX2KY4SfTbUDpHWg6ZYGRQpPsKn4qZZqddPKswzHDXJ3vh8tDv4JnzuMSUNjimQepjtHVNP2V9gCJ9QJ2JjSgi85HtuEBmFp1pibgF4WCkD7WbGKn7vYD5JxZWhG6zmKydd4sgLVSx9E4N.jpeg](htt
বসার পর যে জিনিসটি লক্ষ্য করলাম সেটা হচ্ছে এই রেস্টুরেন্টে সার্ভিস দেয়ার লোকের সংখ্যা খুবই কম। যার ফলে লোকজন একটু বেশি হওয়াতে তারা হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে। যাইহোক আমরা ওয়েটারকে ডেকে খাবারের অর্ডার করলাম এবং জিজ্ঞেস করলাম খাবার সার্ভ করতে কত সময় লাগবে? তারা জানালো ২০ থেকে ২৫ মিনিট সময় লাগবে। ইতিমধ্যে দুটো বেজে গিয়েছে। পেটে ছুঁচোর নাচন শুরু হয়ে গিয়েছে। এত সময়ের কথা শুনে আমি কিছুটা হতাশ হলাম। তারপরেও যেহেতু কিছু করার নেই তাই অর্ডার দিয়ে চুপচাপ বসে থাকলাম।শুধু চুপচাপ বসেছিলাম না। নিজেদের ভেতর নানা রকম গল্প করছিলাম।
এদিকে খেয়াল করে দেখি ২০/২৫ মিনিট পার হয়ে গিয়েছে অনেকক্ষণ আগেই। কিন্তু খাবার দেয়ার কোনো লক্ষণ দেখছি না। রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষের একজনকে ডেকে একটু তাড়া দিলাম। সে খুবই ভদ্রভাবে জানালো অল্প সময়ের ভেতরেই আপনাদেরকে খাবার সার্ভ করা হবে। যাই হোক সে তার কথা রেখেছিলো। কয়েক মিনিটের ভিতর আমাদের টেবিলে খাবার চলে এলো। প্রতিবার যেটা হয় সাধারণত খাবার আসার সাথে আর ছবি তোলার কথা মনে থাকেনা। তবে এবার আর সেটা হয়নি। এবার ছবি তুলে তারপর খাওয়া শুরু করছি।
আমরা অর্ডার করেছিলাম তিনজনের জন্য তিনটি সেট মেনু। সেই সেট মেন্যুতে ছিলো চিকেন চাওমিন, ফ্রাইড রাইস, চিকেন ফ্রাই, এবং বিরিয়ানি। সাথে তো ড্রিঙ্ক ছিলোই। প্রথমে অবশ্য আমাদেরকে বিরিয়ানি সার্ভ করেছিলো। যেহেতু পেটে প্রচন্ড ক্ষুধা তাই সাথে সাথেই বিরিয়ানি সাবাড় করে দিলাম। বিরিয়ানি শেষ হওয়ার কিছুক্ষণের ভেতরে বাদবাকি আইটেম দিয়ে গেলো। খাবার গুলো বেশ মজাদার ছিল এবং একদম ফ্রেশ ছিলো। বেশ তৃপ্তি সহকারে আমি খেলাম। কিন্তু আমার সাথের দুজন বিরিয়ানি আর ড্রিংকস বাদে প্রায় কোনো খাবারই শেষ করতে পারেনি।যার ফলে তাদের কাছ থেকে অনেকটা আমাকে খেতে হয়েছে। খাবার নষ্ট করতে আমার কাছে সব সময় খারাপ লাগে। নিতান্ত বাধ্য না হলে আমি কখনো খাবার নষ্ট করি না। আরেকটি জিনিস তো আপনাদেরকে বলাই হয়নি। এবারের খাওয়ার বিলটা কিন্তু আমাকে দিতে হয়নি। আমার মামা তার ব্যবসা ইনকামের টাকা থেকে বিলটা দিয়েছে। বিল না দিতে হলে রেস্টুরেন্টে খেতে খুব একটা খারাপ লাগে না। কি বলেন? হা হা হা।
এখন আসি রেস্টুরেন্টের পরিবেশ সম্বন্ধে। রেস্টুরেন্টের ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন মোটামুটি ভালোই ছিলো। তবে একটি জিনিস আমার কাছে খুব একটা ভালো লাগেনি। ভেতরে এসির ব্যবস্থা আছে কিন্তু কোনো ফ্যান নেই। আমরা যখন খেতে গিয়েছিলাম তখন বেশ কয়েকবার বিদ্যুৎ চলে গিয়েছিলো। কিন্তু তাদের জেনারেটর চালাতে বেশ দেরি হয়েছে। যার ফলে আমাদের গরমের ভেতর অনেকটা সময় কাটাতে হয়েছে। কিন্তু যদি ফ্যান থাকতো তাহলে আর এই সমস্যা হতো না। এই ব্যাপারটাতে তাদের নজর দেয়া উচিত। খাবারের মান বেশ ভালই ছিলো। সবকিছু মিলিয়ে সেখানে খেতে যাওয়ার অভিজ্ঞতাটা ভালোই ছিলো।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
আসসালমু আলাইকুম
Device name vivo X50
Camera 108 Mp
Short by me