হাজারদুয়ারী-
হাজারদুয়ারী ঢোকার রাস্তা, দূরে দেখা যায় মসজিদ-
পেছন দিক থেকে হাজারদুয়ারী এমন দেখায়-
প্রিয়,
পাঠকগণ,
কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলে ভালো আছেন।
আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো আমার হাজাদুয়ারী ঘুড়তে যাওয়ার অভিজ্ঞতার কথা। আমার দিদি বি. এস. সি. নার্সিং পড়ার পড়ে কাঁদি মহকুমা হসপিটাল এ ট্রান্সফার পায়, সেই সূত্রেই আমাদের মুর্শিদাবাদ যাওয়া। কাঁদি যেতে বহরমপুর থেকেও বাস এ প্রায় দেড় ঘণ্টা লাগে।
আমরা বহরমপুর যেতাম ভায়া বনগাঁ- রানাঘাট হয়ে। সেখান থেকে বাস ধরে সোজা কাঁদি বাসস্ট্যান্ড, তারপর টোটো করে সোজা দিদির কোয়ার্টারের সামনে নামতাম। দিদি দুই বছর সেখানে ছিলো, সেই কারনে বেশ কয়েকবার সেখানে যাওয়া হয়েছে।
যেবার প্ল্যান হলো সবাই হাজাদুয়ারী ঘুড়তে যাবো সেবার অনেকে একসাথে গিয়েছিলাম দিদির ওখানে,আমি, মামী,মামা, বোন, আমার বান্ধবী (রাখী), দিদির জা,তার মেয়ে এত জন মিলে সেবার দিদির ওখানে ছিলাম। দাদা (দিদির হাজব্যান্ড) একটা গাড়ি ঠিক করেছিল, ঘুরতে যাওয়ার দিন আমরা সকালে টিফিন সেরেই বেড়িয়ে পড়েছিলাম। কারণ অনেক গুলো জায়গা দেখার ছিলো তাই সময়টা একটা বড় ব্যাপার।
সারাদিন অনেক মজা হয়েছিল, তিতলি ও আমাদের সাথে গিয়েছিল, খুব মজা করেছে সেও। তখন সে আর ও ছোট তবুও নিজের ব্যাগ নিজেই নিয়েছে, এবং একা হেঁটে হেঁটে ঘুরেছে,একবারও কোলে ওঠার বায়না করেনি।
হাজারদুয়ারী আসলে স্বপ্নের মত সুন্দর ।
হাজারদুয়ারী তে কতো পুরোনো ইতিহাস চাপা পরে আছে, সেখানে গেলেই জেনো মনটা অন্যরকম হয়ে যায়। পুরোনো অনেক তথ্য জানলাম , যদিও ভেতরের ফোটো তোলা নিষেধ, তখনকার সময়ের অনেক কিছু সংরক্ষিত আছে সেখানে। সেই সময়কার ব্যবহৃত সকল আসবাবপত্র, বাসনপত্র,অস্ত্র,রাজা মহা রাজাদের পোশাক, আরও অনেক কিছু।সব থেকে ভালো লাগে একটা আয়না দেখে, যেটার সামনে দাঁড়ালে নিজের মাথা নিজে দেখা যায়না অথচ পেছনের সবার মাথা দেখা যায়, কাঁচটা এমন ভাবেই সেট করা।
সেখান থেকে আমরা মসজিদ দেখলাম, মসজিদ যদিও সেদিন বন্ধ ছিল, কিন্তু বাইরে ছোট্ট একটা ঘর আছে,যেখানে মক্কা মদিনর মাটি রাখা আছে, যেসকল মানুষেরা হজ করতে মক্কা মদিনা যেতে পারেনা তারা এখানে এসে হজের পূণ্য লাভ করতে পারেন।
মসজিদ-
আর একটি কামান আছে, যেটি বিশ্বের সবথেকে বড় কামান।কথিত আছে,একবার পরীক্ষা করার জন্য সেই কামানটি চালানো হলে তার কম্পনে পার্শ্ববর্তী এলাকায় যত গর্ভবতী মহিলা ছিলেন তাদের সব বাচ্চারা নাকি গর্ভের ভেতরেই মারা গেছিল।
কামান-
একটা বড়ো ঘড়ি আছে, যার কোনো ব্যাটারী নেই,যেটা সূর্যের আলোর সাথে সাথে টাইম পাল্টায় এবং সেই ঘড়িতে একদম সঠিক টাইম দেখা যায়।
সূর্য ঘড়ি এর নাম -
এছাড়াও আশেপাশের অনেক স্পট ঘুরে দেখেছি, গঙ্গা তীরে একটা পার্ক হয়েছে সেখানে ঘুরে ও ভীষণ ভালো লেগেছিলো।
পার্কে এইরকম একটি সৈন্য দলের কাঠামো তৈরী করা আছে-
পার্কে দাড়িয়ে হয়তো জীবনেরই কোনো কথা বলছিল দুজন (মামা আর মামী) লুকিয়ে তুলেছিলাম ফটোটা-
আমরা অনেক বছর আগে গেছি এখোন হয়তো আর ও ভালো হয়েছে। তবে ওই অভিজ্ঞতা ভোলার নয়, নিজের মানুষদের সাথে কাটানো এইসময় গুলোই দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে, এই ব্যাস্ত জীবনে কিছু সময় নিজের আপনজনদের দেওয়া খুব দরকার না হলে ধীরে ধীরে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের সবাই বড্ড আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠবে।
যাইহোক আমাদের কিছু ফোটো শেয়ার করছি দেখে নিশ্চয় আপনাদেরও ভালো লাগবে, ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন,শুভরাত্রি।
আমরা সকলে-
নিজের বাবার কোলে তিতলি আর পিছনে বোন আর বান্ধবী-
শ্বেত পাথরের তৈরী মন্দিরে ঢোকার সময় তিতলি রানী-
সাদাকালোয় আমরা তিনজন-