পছন্দের দুটি ফুল-(হলুদটির নাম জানিনা অপরটা নয়নতারা)
প্রিয়,
পাঠকগণ,
আশাকরি আপনারা সবাই ভালো আছেন।
আজ কে আমি আপনাদের সাথে কিছু ফটো শেয়ার করবো যেগুলো আমি আমার বাড়িতে গিয়ে তুলেছিলাম। আসলে এই গাছ গুলোর মধ্যে এমন অনেক গাছ যেগুলো ঘিরে অনেক স্মৃতি আছে,তাই ভাবলাম সেই গল্প বলার পাশাপাশি যদি ছবি গুলোও শেয়ার করি তাহলে আপনাদেরও ভালো লাগবে।
গ্রামের দিকে বাড়ি গুলো সাধারণত অনেকটা জায়গা নিয়ে হয়, তাই সেখান বিভিন্ন গাছ দেখতে পাওয়া যায়।আমাদের বাড়ীতে অনেক পুরোনো একটা কাঁঠাল গাছ আছে, ওটা মায়ের হাতের লাগানো গাছ, প্রচুর কাঁঠাল হয়,খেতেও বেশ ভালো, প্রতিবার কাঁঠাল হতে শুরু করলে এঁচোর থেকে খাওয়া শুরু করা হয়, আর পাঁকা পর্যন্ত চলে। একবার বৃষ্টিতে জল জমে গাছটা প্রায় মরার মত হয়ে গিয়েছিল পড়ে অবশ্য বাবা গাছটার গোড়ায় মাটি দিয়ে উঁচু করেছে। এইবার ও বেশ অনেক কাঁঠাল ধরেছে গাছটায়-
এটাকে বলে কুন্দ ফুল।এই গাছটাও মায়ের লাগানো। ফুলগুলো সাদা রঙের দেখতে ভীষণ ভালো, আর গন্ধটা তো আর ও ভালো, গাছটা অনেক পুরোনো। যখন মা গাছটা লাগিয়েছিল তখন আমি অনেক ছোট।২০০০ সালে বন্যায় গাছটা মরে গিয়েছিল। কিন্তু গাছটা মায়ের এতো পছন্দ ছিলো যে পরে আবার একটা বাড়ি থেকে গাছটা এনে লাগিয়েছিল। এখন মা আর নেই কিন্তু গাছটা তার ফুল দিয়ে কোথাও যেনো মায়ের ভালোলাগা বাঁচিয়ে রেখেছে এখনো। অনেক স্মৃতি এই গাছকে ঘিরে-
এটাকে বলে money plant। এই গাছটা আমার
ছোটদি ওর একজন teacher এর বাড়ি থেকে এনেছিল, এই গাছ বাড়ীতে রাখা নাকি ভালো তাই ও নিয়ে এসেছিল। যদিও ছোট্ট একটা ডাল এনেছিল আর এখন সেটি অনেক বড়ো হয়ে গেছে। প্রথমে মা গাছটি আমাদের ঘরের জালানার পাশের আম গাছের গোড়ায় লাগিয়েছিল, যাতে সেখান থেকে লতিয়ে আম গাছে ওঠে। পড়ে অবশ্য আম গাছ কেটে ফেলা হয়, তখন আবার কিছুটা লতা আমাদের রাস্তার পাশের যে current এর মিটার ঘরের ওখানে লাগানো হয়, তাই তাঁদের বর্তমান ঠিকানা ওই মিটার ঘর-
এটা শিম গাছ। যে ছবিটা দেখা যাচ্ছে এটা শিম গাছের ফুলের ছবি।ঝুনুদিদের বাড়ীতে মাঁচা দিয়ে এবার ওরা শিম গাছ লাগিয়েছিল। আমি যখন গেছি শিম প্রায় শেষ, পাড়ার কমবেশী সকলেই খেয়েছে ওই শিম, আমি গিয়ে দেখি কয়েকটা ফুল নতুন করে ফুটছে, তাই সেই ছবিই তুললাম-
এটাও ঝুনুদিদের বাড়ীর গাছ, পেঁপে গাছ।প্রচুর পেঁপে হয়েছে। গাছটা খুব বেশি বড়ো না, তবে বেশ সুন্দর ভাবে হয়েছে, এখনও অনেক পেঁপে হবে, গাছের ওপর দিকে ফুল হচ্ছে এখনো।দেখে বেশ ভালো লাগলো, এই ছবিটা অবশ্য ঝুনুদি নিজে তুলেছে-
এগুলো পুঁই মিটুলি (পুঁই শাকের ফল)। আমাদের বাড়ীতে কলপারের পাশে এমনি পুঁই শাক গাছ হয়েছিল। হয়তো বীজ পড়েছে কোনো ভাবে, সেখানেই ঠাকুমা কয়েকটা লাঠি দিয়ে এমনই মাঁচা করেছিল, সেখানেই হয়েছিল পুঁই শাক গাছ, এগুলো সেই গাছেরই মিটুলি-
রাস্তার পাশে ফোঁটা দুই রকমের ফুল। একটারও নাম জানা নেই,লাল রঙের ফুলটা সারাবছরই ফোটে তবে এই সাদা ফুলটা শীতকালেই দেখা যায়, মিষ্টি একটা গন্ধ ও আছে, ভালো লাগে আমার ফুল দুটো তাই ফটো তুললাম-
এই আমাদের বাড়ীর গাছের গল্প। আসলে আমাদের বাড়ি গেলে বেশির ভাগ জিনিস জুড়েই মায়ের স্মৃতি। খুব সংসারী ছিলো মানুষটা, অনেক কষ্ট করে বাড়ি ঘর সংসার করেছিল, কিন্তু যখন সুখের সময় এলো তখনই চলে গেল, আর সুখ ভোগ করা হলো না। পর জন্ম বলে যদি সত্যিই কিছু থাকে সেখানে যেনো মা ভালো থাকে। তোমায় খুব মিস করি মা।
ভালো থাকবেন আপনারা। শুভরাত্রি