প্রিয়,
পাঠকগণ,
আশাকরি আপনারা সবাই ভালো আছেন।
আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো তিতলির অন্নপ্রাশন এর দিনের কথা। তিতলি আমাদের কাছে কতটা প্রিয় তার কথা তো আগেই বলেছি, তাই সেই তিতলির অন্নপ্রাশন মানেই আমাদের সকলের কাছে একটা দারুন আনন্দের দিন।
আমরা সবাই মিলে আগের দিন দিদির শ্বশুর বাড়িতে যাই, কারণ পরদিন খুব সকালে আমাদের বেরোতে হতো। রাতে গিয়ে মামীরা যা যা লাগবে সবকিছু গুছিয়ে রাখে, যেহেতু তিতলি খুব ছোট তাই ওতো সকালে ওকে স্নান করিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে না, তাই পরদিন ফ্লাক্স এ করে গরম জল নেওয়া হলো যাতে মন্দিরে গিয়ে অল্প জল দিয়ে স্নান করানো যায়।
পরদিন আমরা সবাই স্নান করে রেডী হয়ে নিলাম, গাড়ী ও চলে এলো, এক এক করে উঠে পড়লাম গাড়িতে, দেখতে দেখতে পৌঁছে গেলাম চাকলা লোকনাথ বাবার মন্দিরে। সেখানেই অন্নপ্রাশন দেওয়া হবে ঠিক হয়েছিল।
মন্দিরে পৌঁছে গাড়ি থেকে নেমে মায়ের কোলে-
সেখানে গিয়ে প্রথমেই টিকিট কাটতে হয়,অন্নপ্রাশন দিলে আলাদা ভাবে জানাতহয় কাউন্টার এ। পাশাপশি আমরা যতজন গিয়েছিলাম তাদের জন্য ভোগের টিকিট কেটে নিল দাদা (তিতলির বাবা)।
ওখানে একটা জায়গায় বসার ব্যবস্থা করা হলো, দিদি আর মামী তিতলিকে স্নান করালো, আমরা ওকে রেডী করলাম, কিছুতেই সে মালা, টোপর কিছুই পড়বে না, যদিও সে বড্ড ছোট্ট তখন। অনেক কষ্টে তাকে কোনোভাবে পড়ানো হলো। তার সে কি কান্না।
মা আমাকে স্নান করাচ্ছে-
খুব কান্নাকাটি চলছে -
যাইহোক কোনো রকম ভাবে থামানো হলো, এরপর একজন ঠাকুরমশাই এসে তিতলির মুখে প্রসাদ দিয়ে দিলেন। যেহেতু তিতলির মামা নেই তাই তিনি বললেন দাদুর কোলে বসলেই হবে। তাই বাবাই ওকে কোলে নিয়ে বসলো।প্রথমবার ভাত খেতে মনেহয় ভালোই লাগছিল, পায়েসটা খাওয়ানোর সময় আবার জিভ দিয়ে চাটছিল।
আমি ভাত খাচ্ছি -
মন্দিরের বাইরে মিমির সাথে -
অনেক কান্নাকাটি করেছি তাই দিদুন আমাকে আদর করছে, আমি পুরো ঘেমে গেছি তাই জামা খুলে ফেললাম -
তারপর আমরাও মন্দিরটা একটু ঘুরে দেখলাম, ভেতরে ফোন নিয়ে যেতে দেয়নি, বাইরের দিকেই আমরা কিছু ফটো তুললাম। শেষে ভোগের প্রসাদ নিলাম, এবং বিকাল বিকাল নাগাদ রওনা দিলাম বাড়ীর উদ্দেশ্য। সন্ধ্যার একটু পর পরই বাড়ি পৌছালাম।খুব মজা হয়েছিল সেদিন। তিতলিকে ঘিরে আমাদের প্রথম আনন্দ অনুষ্ঠানের দিন ছিলো সেদিন। পড়ে দিদি বাড়িতে আলাদা ভাবে অনুষ্ঠান হয়েছিল, আসলে মন্দিরে অন্নপ্রাশন পঞ্জিকার দিন দেখে হয়েছিল, কিন্তু বাড়ির অনুষ্ঠান এমনই হয়েছিল, মন্দিরে তো এতো মানুষ নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় তাই নিয়মটা মেনে নিয়ে পরে দিদি সবাইকে বাড়িতেই ডেকেছিল। সেইসব গল্প অন্য একদিন করবো।
তিতলি আজ অনেক বড়ো হয়ে গেছে কিন্তু আমার যেনো মনে হয় সেই ছোট্টোটিই কেনো রইলো না। সে দিদি হয়ে গেছে আমার বিশ্বাসই হয়না। যাইহোক ভালো থাকুক ও সারাজীবন। অনেক ভালোমানুষ হোক। সুস্থ থাকুক এটাই চাই।
আমি এখন অনেক বড়ো-