বন্ধুরা, আশা করছি সবাই ভালো এবং সুস্থ্য আছো।
প্রার্থনা করছি করোনাময় এই নাজুক সময়ে সবাই সুস্থ্য এবং ভালো থাকো। যাইহোক আমি আগেই বলেছি এখন সময় শীতকাল, আমার প্রিয় সিজন। কারন একটাই আমি গরম কাল পছন্দ করি না, হা হা হা। তবে শীতকাল পছন্দ করার অন্যতম কারন হলো শীতের প্রকৃতি এবং মজাদার সকল খাবারের আইটেম সমূহ। কারন ঐতিহ্যগত ভাবে শীতকালে আমাদের দেশে নানা ধরনের খাবারের আয়োজন চলতে থাকে।
যদিও আজকের পত্রিকায় একটি খবর শুনে মনটা খারাপ হয়ে গেলো। সেটা হলো ঐতিহ্যবাহী খেজুর রসের উৎসবমূখর পরিবেশ হারিয়ে যাচ্ছে। অনেক গ্রামেই এখন খেজুর রস পাওয়া যায় না। আমি প্রতি বছর খেজুরের রস খাওয়ার জন্য নবাবগঞ্জ বেড়াতে যাই এবং গাছের টাকটা রস খেয়ে হৃদয়কে তৃপ্ত করার সুযোগ গ্রহন করি। জানি না এই সুযোগটা আর কতদিন থাকবে।
যাইহোক, আজকে আমি তোমাদের সাথে আরো একটি লোকাল এবং ঐতিহ্যবাহী খাবারের কথা শেয়ার করবো। এটি শীতকালীন পিঠা হলেও এখন সারাবছর পাওয়া যায়। বিশেষ করে ঢাকার প্রতিটি গলিতে এই পিঠাটি বারো বাস পাওয়া যায়। কারন একটাই এর জনপ্রিয়তা। আর এটি হলো চিতই পিঠা, যদিও অনেকে এটাকে চিতি পিঠা বলে। আসলে আমাদের দেশে উচ্চারন জনিত কারনে অনেক জিনিষের নাম পরিবর্তন হয়ে যায়।
চিতই পিঠা ছিলো শীতকালীন পিঠা। আমরা এখনো মনে আছে। শীতকালে স্কুল বন্ধ হওয়ার পর, আমরা সবাই গ্রামের বাড়ীতে চলে যেতাম। তখন নানা আয়োজনে এই পিঠা বানানোর উৎসব চলতো। বিশেষ করে গাছের নারকেল পারা হতো। ঢেকিতে চাল ভাঙ্গানো হতো, আমাদের বাড়ীতে ঢেকি ছিলো। তারপর সন্ধ্যার সময় সবাই মিলে এই পিঠা বানানো উপভোগ করতাম। তখন নানা আকৃতির চিতই পিঠা বানাতো হতো।
তারপর সেগুলোকে সারা রাত ভিজিয়ে রাখতো, নারকেল এবং খেজুরের গুড় দিয়ে রস তৈরী করে সেগুলোর মাঝে। আর আমরা সবাই সকালে ঘুম থেকে উঠে সেগুলোকে উপভোগ করতাম। যদিও এখনও এই নিয়ম বিদ্যমান রয়েছে। কিন্তু শহরের মানুষ নানা ধরনের ভর্তা দিয়ে চিতই পিঠা খেতে বেশী পছন্দ করেন।
বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম কমপ্লেক্স এর ভিতরে কয়েকটি চিতই পিঠার দোকান রয়েছে, যাদের ভর্তাগুলো সত্যি ব্যতিক্রম। আমি প্রায় এখানে চিতই পিঠা খেতে আসি। কারন ঐ যে বল্লাম তাদের ভর্তাগুলো খুবই ব্যতিক্রম। আমি একসাথে তিন পদের ভর্তা নেই, তারপর পিঠাটি স্বাদ গ্রহন করার চেষ্টা করি।
সবশেষে, চিতই পিঠা বানানো খুবই সহজ। আপনি চেষ্টা করতে পারেন বাড়ীতে বসে, কারন শুধুমাত্র চালের গুড়া দিয়েই আপনি এই পিঠা বানাতে পারবেন যদি একবার নিয়মটি দেখেন। সহজ হলেও পিঠাটি খেয়ে মজা পাবেন নিশ্চয়তা দিচ্ছি।
ধন্যবাদ সবাইকে।
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
Connect with Discord: hafizullah#3419