*কেমন আছেন বন্ধুরা। আশা করি সবাই ভাল আছেন। গত দুই দিন যাবত নরসিংদী এসেছি একটি ব্যক্তিগত প্রয়োজনে। বাড়ি থেকে যখন বের হই তখন গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। এর কিছুক্ষণ পরেই শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি যা চলতে থাকে ফরিদপুর থেকে নরসিংদী পৌঁছানো পর্যন্ত। বলতে গেলে সমস্ত রাস্তা বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে এসেছি। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর কারণে সারা বাংলাদেশে প্রায় 24 ঘন্টা একটানা বৃষ্টিপাত হয়েছিল সেদিন। আমার দীর্ঘদিনের একটি অভ্যাস আর তা হচ্ছে যেখানে যাব সেখানকার দর্শনীয় সমস্ত এলাকা ভিজিট করা। উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় জায়গা গুলো নিজের চোখে না দেখলে কেমন যেন একটা অতৃপ্তি থেকে যায় সব সময়। তাই চেষ্টা করি যতটা সম্ভব সবকিছু দেখে আসার। নরসিংদীতেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।*
*নরসিংদীর আকর্ষণীয় জায়গাগুলোর কথা বললে প্রথমেই যেটি আসে তা হচ্ছে গ্রীন হলিডে পার্ক। প্রতিবছর সারা দেশ থেকে প্রচুর পরিমাণে পর্যটক এখানে আসে পিকনিক করতে। খুবই সুন্দর সাজানো গোছানো দর্শনীয় একটি পিকনিক স্পট এটি। যদিও এখানে সবকিছুই কৃত্রিম। নরসিংদী শহর থেকে কিছুটা দূরে পাঁচদোনা নামক স্থানে ঢাকা সিলেট হাইওয়ের পাশে গড়ে উঠেছে এই ড্রিম হলিডে পার্ক। আমরা নরসিংদী শহরের সাহে প্রতাপ এলাকা থেকে মিনিবাসে করে পৌঁছেছিলাম পার্কের গেটের সামনে। ভাড়া জনপ্রতী 15 টাকা। সময় লাগে খুব বেশি হলে ২০ মিনিট। পর্যটন মৌসুম না হওয়ায় এবং ঝড়ের কারণে পার্কে ভ্রমণার্থীদের সংখ্যা ছিল না বললেই চলে। পার্কে প্রবেশ করতেই চোখে পড়বে বিশাল আকৃতির একটি নাগরদোলা। যার জন্য বহু দূর থেকেই পার্কটিকে সনাক্ত করা যায়। এছাড়াও প্রবেশপথের দুপাশে আছে বিশাল আকৃতির দুটি পাথরের তৈরি বাঘ। পার্কে প্রবেশ ফি প্রাপ্তবয়স্ক প্রত্যেকের জন্য ৩২০ টাকা আর আট বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের টিকেট ২২০ টাকা।*
*টিকিট কেটে প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে একটি বড় মানচিত্র। যেখানে সহজ ভাবে পার্কের কোথায় কি আছে তা দেখানো আছে। এই পার্কটি মূলত বেশ কয়েকটি অংশে বিভক্ত। তবে ওয়াটার ওয়ার্ল্ড অংশটি সম্পূর্ণ আলাদা। এখানে প্রবেশ করতে হলে আপনাকে আবারো ৩২০ টাকা দিয়ে টিকিট কিনতে হবে। এছাড়া নতুন কিছু অংশ এখনও নির্মাণাধীন আছে। যেখানে ভলকানো এবং রিভার বোট কায়াকিং ব্যবস্থা থাকবে। সমগ্র পার্কটিতে দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে বিভিন্ন ধরনের রাইড এর ব্যবস্থা। প্রত্যেকটি রাইডের এন্ট্রি ফি ৬০ টাকা থেকে ১১০ টাকা পর্যন্ত। ৫০ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এই পার্কের সম্পূর্ণ অংশ ঘুরে দেখতে হলে আপনাকে যথেষ্ট এনার্জিটিক হতে হবে। এছাড়া চাইলে গাড়িতে চড়েও পার্কে ঘোড়ার ব্যবস্থা আছে। পার্কের ভেতরে বাইরের খাবার নিয়ে প্রবেশ সম্পন্ন নিষিদ্ধ। ভেতরে বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট এবং স্নাক্স বার আছে। যদিও বাইরের তুলনায় দাম এখানে অনেকটাই বেশি। আমরা প্রথমে পায়ে হেঁটে সমস্ত পার্কটি একবার চক্কর দেই। এরপর একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট থেকে দুপুরের খাবার সেরে নেই। খাবারের মান যথেষ্ট ভালো হলেও দাম অনেকে বেশি ছিল। পার্কটিতে আমার কাছে সবচাইতে আকর্ষণীয় যেটা লেগেছে তা হচ্ছে ভূতের বাড়ি। কেউ ভয় পেতে চাইলে নির্দ্বিধায় প্রবেশ করতে পারেন এখানে। ভয় পাবার সবরকম ব্যবস্থাই এখানে আছে। এখানে প্রবেশ করতে চাইলে আপনাকে খরচ করতে হবে ১১০ টাকা। তবে মনে হয় টাকাটা বৃথা যাবে না। অসুস্থ এবং হার্ট দুর্বল মানুষ এখানে প্রবেশ না করাই ভালো ।*
আজকের মতো এতোটুকুই। আবার কথা হবে অন্য কোন বিষয় নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই কামনায় আজকের মত এখানেই শেষ করছি।