ভবিষ্যতে মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি এবং অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি সংঘর্ষ হবে কিন্তু কেন?

💖 সবাইকে স্বাগতম 💖

---

_{Image Source}

হ্যালো বন্ধুরা, আপনারা সকলে কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সকলেই ভালো রয়েছেন। আজ আমি আপনাদের জন্য মহাকাশের নতুন একটি বিষয় নিয়ে কথা বলবো। যদি ও বিষয়টি অনেক জটিল তারপরও আমি সহজ ভাষায় আপনাদের বোঝানোর চেষ্টা করব। আমি প্রতিনিয়তই মহাকাশ এবং পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট করে থাকি আশা করি আমার এই পোস্ট গুলো আপনাদের ভালো লাগে, পোষ্টের নিচে একটি কুইজের ব্যবস্থা থাকবে। তবে চলুন কথা না বাড়িয়ে মহাবিশ্বের গহীন গভীরে হারিয়ে যাওয়া যাক।

আমাদের এই মহাবিশ্বের শুরু হয়েছে একটি বিগ ব্যাং এর মাধ্যমে অর্থাৎ একটি সিঙ্গুলারিটি থেকেই বিস্ফোরণের মাধ্যমে আমাদের সবকিছু মহাজাগতিক বিষয় বস্তু তৈরি হয়েছে। এটা সব দিকে সমান ভাবে প্রসারিত হয়ে যাচ্ছে। এই বিষয়টি আমরা বুঝতে পারি যখন মহাকাশের কোন দূরবর্তী বস্তুর ছবি আমরা দেখতে পাই অর্থাৎ যখন একটি বস্তু আর একটি বস্তুর কাছ থেকে দূরে সরে যায় তখন মহাকাশে সেই ফোটনকনা গুলো ট্রাভেল করার সময় রেড শিফট এ পরিণত হয়। তাদের মাধ্যমেই আমরা বুঝতে পারি সেই বস্তু আগের অবস্থানে নেই এবং প্রতিনিয়ত আমাদের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।

আমরা খালি চোখে যে সব দেখতে পাই এছাড়াও কিন্তু মহাবিশ্বে অনেক কিছু বস্তু রয়েছে যেমন গামারে এক্সরে। এর সাহায্যে আমরা বস্তুর অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারি এবং বস্তুর গঠন সম্পর্কেও আমরা ধারণা করতে পারি। এগুলো কিন্তু খালি চোখে দেখা যায় না এবং এইগুলো ডিটেক্ট করার জন্য বিভিন্ন ধরনের টেলিস্কোপ এর ব্যবহার করা হয়। ইতিমধ্যে পৃথিবীর L2 স্থানে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ স্থাপন করা হয়েছে এবং গামা-রে এক্স-রে এবং রেড-শিফট ডিটেক্ট করে একটি ছবিতে রূপান্তরিত করতে পারে।

_{Image Source}

মহাবিশ্বে অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয়বস্তু রয়েছে। মনে করুন, আমাদের সম্পূর্ণ ইউনিভার্স কে যদি কল্পনা করা হয় তাহলে সেটা হবে অনেকটা পানির মত এবং আমাদের পানিতে যেসব অনু রয়েছে এইসব হচ্ছে আমাদের এই গ্যালাক্সি। তাই খালি চোখে সে গুলোকে ডিটেক্ট করা কোনভাবেই সম্ভব নয়। পানির মাধ্যমে একটি উদাহরণ দেওয়ার চেষ্টা করলাম তাহলে আপনাদের বুঝতে সুবিধা হবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের এই মহাবিশ্ব যদি সব দিক থেকেই প্রসারিত হচ্ছে তাহলে অ্যানড্রোমিডা এবং আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির কেন পরস্পরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে? এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে আরো কিছু বিষয় আমাদের জানা দরকার।

মহাবিশ্বের প্রসারণ বলতে আমরা কি বুঝি? সেই বিষয়টা একটু ক্লিয়ার হওয়া দরকার। যদি আমি বলে থাকি আমাদের মহাবিশ্বের প্রসারণ হচ্ছে তাহলে আমাদের সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব বাড়ছে না কেন?? তাহলে কোন দিক থেকে আমাদের এই মহাবিশ্বের প্রসারণ হচ্ছে। মনে করুন দুটি গ্যালাক্সির মধ্যবর্তী দূরত্ব হচ্ছে এক লক্ষ লাইট ইয়ার। এই গ্যালাক্সির পরস্পর থেকে দূরে সরে যাবে প্রায় 2200km/sec আবার যদি কোন দুইটি গ্যালাক্সির মধ্যবর্তী দূরত্ব এক কোটি লাইট ইয়ার হয় তাহলে সেটা প্রায় 23000km/sec গতিতে দূরে সরে যাবে অর্থাৎ যে বস্তু অন্য বস্তু থেকে যত দূরত্বে অবস্তান করছে তারা তত বেশি দূরে চলে যাচ্ছে। বর্তমানে যে বিষয়টি বললাম সেটি আলোর গতির প্রায় ৭%। তাহলে আপনার একবার চিন্তা করে দেখুন আমাদের এই মহাবিশ্ব কত দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে।

_{Image Source}

এখন আমরা একটি বিষয় ক্লিয়ার ভাবে বুঝতে পারলাম আমাদের এই মহাবিশ্ব প্রসারিত হচ্ছে, কিন্তু কেন হচ্ছে? সেই বিষয়টিও তো জানা দরকার। সেটা যদি সংক্ষিপ্তভাবে উত্তর দেয়া যায় তাহলে সেটা হচ্ছে ডার্ক এনার্জি। ডার্ক এনার্জি কিভাবে কাজ করে এই বিষয়গুলো নিয়ে বিজ্ঞানীরা এখনো চিন্তায় রয়েছে তবে এর নাম দেওয়া হয়েছে ডার্ক এনার্জি, এর মাধ্যমেই প্রসারিত হচ্ছে।

মহাবিশ্বের যেকোনো গ্যালাক্সি হোক না কেন, যতই কাছাকাছি থাকুক বা দূরে থাকুক একটু হলেও প্রসারণ হবে কিন্তু এর মাঝেও অনেক ধরনের কথা লুকিয়ে রয়েছে। যা আমি পরবর্তী পর্বে আপনাদের বুঝিয়ে বলব। একটি পর্বে এত বিস্তারিত বলা সম্ভব হয়ে ওঠে না তবে একটি বিষয় বলে রাখি, আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি এবং অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি মধ্যে একটি শক্তিশালী গ্রাভিটি কাজ করে।

এখন প্রশ্ন হলো আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির এবং অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সির মহাকর্ষ বা গ্রাভিটির বল রয়েছে, সেটিকি ডার্ক এনার্জির চেয়েও বেশি নাকি কম। আবার আমাদের এই মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি যেই জায়গায় অবস্থান করছে এখানে আরো অনেকগুলো গ্যালাক্সি রয়েছে। সবগুলোকে মিলিয়ে একটি লোকাল গ্রুপ অফ গ্যালাক্সি বলা হয়। এখানেও মহাকর্ষ বল অনেকটাই কাজ করে। এই বিষয়গুলো নিয়ে প্রশ্ন আসতে পারে, এসব নিয়ে বিস্তারিত আমি দ্বিতীয় পর্বে আলোচনা করব।