আর জাস্ট তিন ঘণ্টা পরে আমার বাংলাদেশের ফ্লাইট। আম্মু খুব যত্ন করে আমার ফ্রি ওই ইলিশ মাছ ভাজি দিয়ে ভাত খাইয়ে দিচ্ছিল, এন্ড অনেক অনেক উপদেশ দিচ্ছিল— কিভাবে চলবো, না চলবো, দুষ্টুমি না করতে, অযথা বের না হতে, আর কারো সাথে যেন ঝগড়া না হয়। যাই হোক, আম্মুকে রেখে যাচ্ছি, অনেক কান্নাকাটি করছিল, এন্ড আমার মনটাও খুব খারাপ ছিল। এন্ড উৎস, আমার ছোট ভাইটা, আমাকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসে।
একা একাই এবার ট্রাভেল করতে হবে, একটু ভয় লাগছিল। লাস্ট বার টার্কিশ এয়ারলাইন্সে করে ইউএসএতে এসেছিলাম, এবার কুয়েত এয়ারলাইন্সে করে বাংলাদেশ যাচ্ছি, তো নতুন একটা অভিজ্ঞতা হবে আশা করি।
প্লেন ছাড়ার আগে বেল্ট পড়ে নেই। ইউএস-এর সময় ঠিক চারটায় আমাদের প্লেন ছাড়ে। যেহেতু ১২ ঘণ্টার ফ্লাইট, কি করবো কি করবো ভাবি। একটু মুভি দেখি, সময়টা একটু পাস করি। মুভি দেখতে দেখতে ডিনারও সার্ভ করে দেয়।
প্রথমে পাইনাপেল জুসটা খেলাম, দেন একটা সুইট কর্ন ছিল। সুইট কর্নটা অনেক মজার ছিল, সাথে চেরি টমেটোটা ছিল একটু টকটক, বাট সব মিলিয়ে কম্বিনেশনটা আমি জুস ছিল। এইবার চিকেন স্টেক! চিকেন স্টেকটা কি বলবো, অনেক ফ্লেভারফুল ছিল। এরপর এক টুকরো ব্রেড দিয়ে একটু গ্রেভিটা ট্রাই করি, ভালোই ছিল। এন্ড এরপর যতটুকু ব্রেড ছিল, ওইটা দিয়ে আবার একটু বাটার দিয়ে খাই।
ডেজার্টে তিরামিসু কেক ছিল, এন্ড চকলেট ফ্লেভার। নরমালি এটা একটু তিতা করে ফেলে, বাট এটার কম্বিনেশন সবকিছু অনেক ভালো [মিউজিক]। খাওয়া-দাওয়া শেষ, আর খুব ঘুমও পাচ্ছিল। একটা লম্বা ঘুম দিব।
এখন একটা না, প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ঘুমালাম। বাট এখনো দেখি পাঁচ ঘণ্টার মতো বাকি প্রায় পৌঁছাতে। তো ভাবলাম, ওয়াশরুমে গিয়ে একটু ফ্রেশ ফ্রেশ হয়ে নেই। ফ্রেশ হয়ে এক গ্লাস পানি খাই, দেন জানলা খুলে দেখি সকাল হয়ে গেছে, এন্ড কুড়িতে পৌঁছাতে খুব বেশিক্ষণ সময় বাকি নেই।
এর মধ্যে আমাদের ব্রেকফাস্ট দিয়ে দেয়। ব্রেকফাস্টে ছিল ডিম অমলেট, এন্ড মাশরুম, এন্ড ফ্রুটস [মিউজিক]। ছিল জেলি, বাটার, এন্ড হচ্ছে তোমার ব্রেডের সাথে, খুব সুন্দর মতন মেখে টেকে খাই। বলতে গেলে না, ওই অমলেটে পেট ভরে নাই, বেশ অনেক ক্ষুধা লাগছিল ঘুম থেকে উঠার পরে। সারাদিন পর এক কাপ চা না হলেই না।
চা খেতে খেতে চলে আসলাম কুয়েতে। ওদের সকাল প্রায় ১১টার সময় আমরা কুয়েতে ল্যান্ড করছি। কুয়েতের এয়ারপোর্টটা খুব একটা সুন্দর না। পাঁচ ঘণ্টা ট্রান্জিট, জানিনা কিভাবে সময় কাটাবো। আর এত ছোট্ট, ঘুরে দেখারও কিছু নাই। সো, একটা কফি কিনলাম, দেন একটা লাইব্রেরিতে গেলাম, ওখানে সো, একটু বই-টই পড়লাম।
আমি বেসিক্যালি ঘুরে ঘুরে মেকআপ সেক্টরটা খুঁজছিলাম, এন্ড পেয়ে গেলাম। তাও খুব বেশি নাই, লাইক ডিওর এন্ড শ্যানেল— কয়েকটা জাস্ট আউটলেট আছে। সো, এর মধ্যে আমার একটা লিপস্টিক খুব ভালো লেগে যায়, শ্যানেলের, এন্ড এটা আমি কিনে নেই। এন্ড জাস্ট, সি দ্যা কালার, অনেক অনেক সুন্দর!
ঘুরতে ঘুরতে চোখ পড়লো ব্রাজিলের জার্সির উপর, সো, ওইটাও কিনে নিলাম। এন্ড এইতো! কিনে-টিনে আবারো গিয়ে ওয়েট করছিলাম প্লেনের জন্য। এত বোরিং লাগছিল, সত্যি কথা বলতে সময় কাটছিলই না। মনে হচ্ছিল খুব খুশি খুশি লাগছিল মনে মনে। আর কিছুক্ষণ পরেই বাংলাদেশ চলে যাব, অনেক অনেক ভালো লাগছিল। কতদিন পর যাচ্ছি নিজের দেশে!
প্লেন সাথে সাথেই আমাদেরকে ডিনার দিয়ে দেয়। ডিনারে ছিল ল্যাম্ব বিরিয়ানি। এটা কিন্তু অনেক মজার ছিল, আমি এতটা এক্সপেক্ট করি নাই, বিকজ নরমালি ওদের খাবারগুলো ডেকোরেশন এত সুন্দর হয়, বাট অত একটা মজা হয় না। বাট এটা সত্যি, অনেক ইয়ামি ছিল!
ডেজার্টটা খুব একটা ভালো লাগেনি, সত্যি বলতে কেমন যেন! একটু মিষ্টিও কম ছিল, পায়েশের মত খেতে। এরপর পনির টেস্ট করলাম। একটু ঘুমানোর চেষ্টা করলাম, বাট কোনভাবেই ঘুম আসছিল না। কারণ অনেক এক্সাইটমেন্ট কাজ করছিল, আর মাত্র পাঁচ ঘণ্টা বাকি!
এইতো, চলে আসলাম!
এখন একটা মজার ব্যাপার— একা একা ট্রাভেল করতে কেমন লাগে, রাইট? খুবই ভালো একটা অভিজ্ঞতা! একা একা চলাফেরার মজাই আলাদা, সত্যি কথা! [মিউজিক]
বাকি ব্যাগগুলোর জন্য ওয়েট করছিলাম। সেগুলো সব গুছিয়ে-ডুছিয়ে নিয়ে এখন আবার যাচ্ছি মেইন রোডের দিকে। এন্ড আমার ফ্রেন্ডরাও সবাই চলে আসছে অলরেডি। এটা কি! পাগল ভাই আবার ফুল নিয়ে আসছে আমার জন্য! কতদিন পর আমার ঢাকার বাসায় যাচ্ছি!
এই যে, ড্যান্সার বাবা! দেন গোসল-টোসল করে খেতে বসলাম। আজকে মেনুতে ছিল গরুর মাংসের ভুনা, ভাই! অতিরিক্ত গরম গরম ভাত, গরুর মাংস!