বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারোকাতুহ।
[হ্যালো আমার প্রিয় বন্ধুরা।
আমি @rasel8. #বাংলাদেশ থেকে।
সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আবারও আপনাদের মাঝে হাজির হয়ে গেলাম আমার আরেকটা নতুন পোষ্ট নিয়ে। আজকে আমি আপনাদের সাথে কিছু বাস্তবমুখী কথা শেয়ার করব। যা আমরা সবাই মেনে নিতে বাধ্য। চলুন শুরু করি-
প্রবাদে বলে "সময় ও স্রোত কাহারও অপেক্ষা করে না।" আসলে জীবনের নির্মম বাস্তবতাকে খুজতে গেলে দেখা যাবে সময়ের সেই গহীন অতল গহ্বরে ডুবে গিয়েছে আমাদের কতশত স্বপ্ন, আশা, কত চেনা মুখ তাদের স্মৃতিগুলো। যা আর কখনও ফিরে পাওয়ার নয়। মাঝে মাঝে হয়ত স্বপ্নে বা চোখের ক্লান্তিতে কোনো একদিন তাদের কথা আমাদের স্মৃতিতে ফুটে উঠবে। তখন হয়ত আমরা অনুমান করতে পারি আসলেই জীবনের আসল বাস্তবতাটা কোথায়। কখনও কি ভেবে দেখেছেন, আপনার দাদা, দাদী, আত্নীয় স্বজনেরা কত জন চলে গেছে এই দুনিয়া ছেড়ে। কখনও কি তারা আর ফিরে আসবে, বা তাদেরকে কি আমরা সব সময় মনে রাখি বা স্বরণ করি। স্বরণ কি তাদের সেই স্মৃতিময় জীবনের বৈচিত্র্য গুলো। হয়তবা কালক্রমে মাঝে মধ্যে হঠাৎ মনে পরলেও পরতে পারে। তবে সব সময় ধরবে না এটাই স্বাভাবিক।
আশে পাশের কতশত পরিচিত মুখগুলো আজ প্রকৃতির কাছে হেড়ে গিয়ে সৃষ্টিকর্তার ডাকে সারা দিয়ে চলে গেছেন। এই তো কয়েক মাস আগের ঘটনা৷ আমাদের বাড়ী থেকে কয়েক বাড়ী পরেই এক ভাইয়ের বাড়ী। বয়স আনুমানিক ৩৫+ হবে আর কি। আমি তখন ঢাকাতে ছিলাম৷ রাতে যখন বাড়ীতে কল দিয়ে কথা বলতেছিলাম। তখন মা হঠাৎ বলে উঠল, ভাই মারা গিয়েছে হার্টঅ্যাটাক করে। আমি শুনে যেন আকাশ থেকে পরলাম। যুবক মানুষ না হয়েছে বয়স না কোনো রোগ। সৃষ্টির কি নিয়ম। আসার সিরিয়াল থাকলেও যাওয়ার কোনো সিরিয়াল থাকে না। যার যখন ডাক আসে তাকে তখনই চলে যেতে হয়।
ভাইয়ের কথা মাঝে মাঝে মনে পরে।।পরার কারণও আছে। বিশেষ করে রমজান মাসে যখন সাহরীর সময় মাইকের আওয়াজ শুনি তখন বেশি মনে পরে। ভাই মূলত সাউন্ড সিস্টেম এর জিনিস ভাড়া দিত। আর রমজান মাসে রাতে ভ্যান আর মাইক নিয়ে মানুষ কে ডেকে জাগিয়ে তুলত যাতে সবাই রান্না করে সঠিক সময়ে সাহরী করতে পারে। আশে পাশের কয়েকটা গ্রাম তিনি মাইক নিয়ে এভাবে ডেকে বেড়াতেন। মাইকে বলতেন-
এভাবেই ডেকে যেতেন। আর মাঝে মাঝে মাইকে গজল দিতেন। গত রমজানেও ভাইয়ের সেই ধ্বনি আমরা শুনেছি। কিন্তু এই রমজানে তিনি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। নিয়তির কি পরিহাস । কেউ জানে না, সে আগামি কালকে বেঁচে থাকবে নাকি। সৃষ্টি এই নিয়ম আমরা সবাই মানতে বাধ্য। সবাই তো আমরা দুনিয়ার ঘরকে সাজাতে ব্যস্ত। আমাদের মৃত্যুর পরের ঘরগুলো কিভাবে সাজাবো সেটা কি কেউ কখনও চিন্তা করে দেখেছি৷ হয়ত খুব কম সংখ্যক লোকই সেটা চিন্তা করে।
গতকালকে মাইকে যখন সাহরির সময় মুয়াজ্জিনকে বলতে শুনলাম সাহরির আর মাত্র কয়েক মিনিট সময় বাকি। তখনই কেন জানি হঠাৎ সেই ভাইয়ের কথা মনে পরে গেল। যে কি না আমাদেরকে এভাবে ডেকে পুরো গ্রামকে জাগিয়ে তুলত। সময়ের সাথে সাথে সেও হারিয়ে গেছে। হয়ত এখন অল্প মানুষই তাকে মনে রেখেছে। আসলে দিন শেষে আমাদের চলে যেতে হবে এটাই বাস্তব। এটাকে মেনে নিয়ে যত সামনে এগোতে পারব তত আমাদের জন্য কল্যানের।
আজকে একটু মন খারাপ হয়েছিল। এজন্য ভাবলাম ভাইয়ের স্মৃতি হিসেবে কিছু কথা আপনাদের মাঝে বলে রাখি। এজন্য আজকের এই পোষ্টটা লেখা। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আবারও দেখা হবে আমার নতুন কোনো পোষ্ট নিয়ে।