বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারোকাতুহ।
হ্যালো আমার প্রিয় স্টিমিয়ান বন্ধুরা। |
---|
আমি @rasel8. #বাংলাদেশ থেকে। |
[জীবনের পথ চলাটা বড়ই অদ্ভুত। আমরা মন প্রাণ দিয়ে যে জিনিসগুলো সব সময় চেয়ে থাকি তা হয়ত সব সময় পায় না। একটা নিদিষ্ঠ গন্তব্যে পৌছানোর জন্য আমরা কত পরিকল্পনা, রুটিন করে পথ চলতে শুরু করি। একটা সময় দেখা যায় হয়ত কোনো কারণে আমাদের সেই গন্তব্যে পৌছানো হয় না। স্বপ্ন গুলো পূরণ হয় না৷ আপনাদের মনে হতে পারে, আমি প্রতিযোগিতার মাঝে আবার এসব কেনো বলতেছি, একটু ধৈর্য ধরুন আমার পরের লেখাগুলো পড়লে তা বুঝতে পারবেন।
আসলে জীবন নিয়ে, নতুন বছর নিয়ে আমাদের কতশত পরিকল্পনা।৷ যার কিছু খন্ট পরিকল্পনা আপনাদের মাঝে আমিও তুলে ধরতে চলেছি। আসলে যদি পূর্বের ২০২৪ নিয়ে কিছু কথা শেয়ার করি। তাহলে হয়ত আপনারা কিছুটা হলেও আমার ২০২৫ নিয়ে কি পরিকল্পনা তা বুঝতে পারবেন।
সময়টা ছিল ২০২৩ সালের অক্টোবর মাস। বাংলাদেশের একমাত্র পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের জন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হলো ডুয়েট ( ঢাকা ইন্সটিটিউট অব ইন্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি)। হাজার হাজার শিক্ষার্থী স্বপ্নের ঠিকানা ডুয়েটে পড়ার জন্য গাজিপুর শহরে যায়। বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করার জন্য। আমার ডিপ্লোমা লাইফ থেকেই ডুয়েটে পড়ার স্বপ্ন ছিল। এজন্য ভর্তি পরিক্ষা দেওয়ার জন্য করতে হয় কোচিং। যার জন্য আমি সপ্তম পর্বের শেষে ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে চলে যায় গাজিপুর। দীর্ঘ ২০২৩ সাল এবং ২০২৪ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত ১৩ টা মাস কোচিং করি। কঠোর পরিশ্রম করলাম, চার দেওয়ারলের মাঝে নিজেকে বন্দী করে রাখলাম স্বপ্নের ঠিকানায় যাওয়ার জন্য। নিজের সবটুকু দিয়ে পড়াশুনা করেছিলাম। পারিবারিক সমস্যা, নিজের অসুস্থতা থাকা সত্তেও পড়াশুনায় কোনো গাফিলতি করি নাই। ভেবে ছিলাম হয়ত আল্লাহ তায়ালা আমার স্বপ্নটা পূরণ করে দিবে। কিন্তু হয়ত রিজিক সেখানে আমাকে নিতে চায় না।
ভর্তি পরিক্ষার হলে গিয়ে প্রশ্ন দেখেই বুঝেছিলাম হয়ত স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে আর পড়া হবে না। এতো দিনের সব কষ্টগুলো জলে গেল। প্রশ্ন অনেক কঠিন হয়েছিল, যার ফলে পরিক্ষা ভালো দিতে পারি নাই। অনেক কষ্টে কান্না করতে করতে পরিক্ষা হল থেকে বের হয়ে রুমে চলে এসেছিলাম। ২০২৪ সালের শেষ পর্যন্ত কান্না করেই পার করেছিলাম। শেষ পর্যন্ত চান্স আর পেলাম না। দুঃখ আর কষ্ট নিয়েই একটা বছরকে জীবন থেকে বিদায় দিয়েছিলাম। রেজাল্টের পর ডিসেম্বর মাসে বাড়ি চলে এসেছিলাম। জীবনটা যেন থেমে গিয়েছিলাম কি করব কিছু বুঝতে পারতেছিলাম না। সামনের দিনগুলো কিভাবে কাটাবো কি পরিকল্পনা করব তাও ঠিক করতে পারতেছিলাম না। আব্বু আম্মু অনেক বুঝালো, বলল আরও একবার পরিক্ষা দেওয়ার সুযোগ আছে দাও। হয়ত এবার চান্স হয়ে যাবে। আমার মন কিছুতেই মানতেছিল না। এভাবেই কষ্টে ২০২৪ সালকে বিদায় জানিয়েছিলাম। এবার চলুন প্রতিযোগিতায় ফিরে যাওয়া যাক।
Tell us how you planned to spend the first day of 2025 and whether it was successful or not?
![]() | ![]() |
---|---|
![]() | ![]() |
২০২৪ সালটা কাটানোর পর কোনো পরিকল্পনাই ঠিক করতে পারতেছিলাম না। অনেক ভেবে পরিবার পিতা মাতা, নিজের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে ভাবলাম জীবনের একটা বছর শেষ করেও চান্স পেলাম না আরও একবার সুযোগ আছে পরিক্ষা দেওয়ার না হয় আরও একটা বছর জীবন থেকে নষ্ট করি, কষ্ট করে পরিক্ষা দেয়। যদি রিজিকে থাকে চান্স হয়ে যায়। মনকে অনেক বুঝিয়ে পরিকল্পনা করি ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসের ১ তারিখে আবারও চলে যাব গাজিপুর শহরে ডুয়েটে ভর্তি পরিক্ষা দেওয়ার জন্য কোচিং করতে। পরিকল্পনা মতো আগে থেকেই ট্রেনের টিকিট কেটে রেখেছিলাম। ৩১ ডিসেম্বর সকল জিনিস গুছিয়ে রেখেছিলাম। ১ তারিখ সকাল বেলা ৯ টার দিকে বাড়ী থেকে কষ্ট, কান্না করেই বের হয়েছিলাম পিতা মাতার থেকে বিদায় নিয়ে। ছাত্র জীবনে স্বপ্নের জায়গায় না যেতে পারলে এতো কষ্ট হয় তা নিজেকে দিয়ে উপলব্ধি করলাম। আমার বাড়ী থেকে গাজিপুরে যেতে প্রায় ১০ ঘন্টা লাগে। সারা দিনই ট্রেনের মধ্যে ছিলাম। পরিকল্পনা মতো ১ তারিখ দিনটা সারা দিন যাত্রা করতেই কেটে গিয়েছিল।
To welcome the new year, do you value time spent with friends or family more and why? Tell about it.
দুঃখ করেই বলতে হচ্ছে নতুন বছরের প্রথম দিনটায় পরিবার বন্ধুদের ছাড়া চলে যেতে হয়েছিল নিজের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে। আপনাদের হয়ত মনে হতে পারে, ২/১ দিন পরে গেলেও তো হতো। আসলে আমি পরিকল্পনা করেছিলাম বছরের শুরুটা পড়াশুনার দিকে ফোকাস করেই শুরু করব৷ যাতে আমি আমার গন্তব্যে পৌছাতে পারি। এজন্য বলতে গেলে আমি পরিবার বা বন্ধুদের সাথে সময় কাটাতে পারি নাই৷ নিজের জীবনটাকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে ভিন্ন শহরে চলে গেলাম।
In the first month of the new year, tell about an event in your life from which you learned something that will help you on your way for the rest of your life.
সত্যি বলতে আমি আমার গত বছরের এডমিশন রেজাল্ট দেওয়ার পর থেকেই আমি আমার জীবনের নানা বাস্তবতার সাথে নিজেকে পরিচিত করতেছি৷ জীবনের আসল বাস্তবতাকে বুঝতেছি৷ যখন আমি ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে গাজিপুর শহরে গেলাম৷ নতুন মেসে উঠলাম, নতুন রুম৷ আমি রুমে একাই রুমমেট আসে নাই। মেসেও কেউ নাই। আমি নুচ তলাতে একা আছি। বাকি যারা ছিল সবাই ছুটিতে বাড়ী গিয়েছে। এদিকে নিজের মনের অবস্থা ভালো না, তারপর একা একা থাকা। তেমন ভালো লাগতেছিল না৷ তারপরও থাকতে হবে। প্রথম কয়েকটা দিন আমার এক বন্ধু আমার রুমে ছিল। আর বাড়ী থেকে যার ফলে কয়েকটা দিন ফোন চালিয়ে কাটিয়েছিলাম। কারণ পড়ায় মন বসছিল না। কিন্তু যখন মেসের সবাই আসল, আমার রুমমেট আসল তারপর আমার পড়ায় মন বসল না৷ মাথা ব্যাথা বেড়ে গেল, সব সময় হতাশা আর ডিপ্রেশনে পরে থাকতাম। আমার যখন খুব মন খারাপ আর হতাশা চলে আসত, তখন আমি আমার এক খুব কাছের বন্ধুকে কল দিতাম। তার নাম ইমন। এমন সময় গিয়েছে ৩০/৪০ মিনিটও টানা সে আমার সাথে কথা বলে শান্তনা দিয়েছে। এই সময়টা একটা ছাত্রের জীবনের জন্য খুব মারাত্মক। একটা ভুল সিদ্ধান্ত তার জীবনটাকে নষ্ট করে দিতে পারে। এজন্য আমি যাতে ভুল কোনো সিদ্ধান্ত না নেই সেজন্য আমার বন্ধু সব সময় আমাকে বুঝাতো, পড়তে বসতে বলত, বলত,,নিয়তি যা আছে তাই হবে সময়টাকে মেনে নাও। নিশ্চয় সামনে আমার জন্য অনেক ভালো কিছু অপেক্ষা করতেছে। আমিও তার কথায় নিজের কষ্টটা কিছুটা কম লাগত।
এজন্য আমি বলব, গত মাসে আমার বন্ধু আমাকে যেভাবে সাহায্য করেছে সেটা ভুলার মতো নয়৷ শুধু সে নয়, আমার একটা বড় ভাই আছে নাম, সবুজ। আমার যখনই মন খারাপ লাগত, আগের এডমিশনের কথাগুলো মনে পড়ত তখনই তাকে কল দিয়ে মানসিক শান্তি খুজতাম। এমন একটা বন্ধু বড় ভাই পাওয়া অনেক সৌভাগ্যের। আমার এই হতাশাগ্রস্ত জীবনে তাদের দেওয়া উপদেশ, মোটিভেশন, আমার জীবনের অনেক ক্ষতি থেকে হয়ত বাচিয়েছে। তাদের এই সাহায্যকে সারা জীবন মনে রাখব। আশা করি আমার সামনের জীবনের হতাশার সময়ও তারাই পাশে থাকবে। এখনও প্রায় প্রতিদিনই তাদের সাথে কথা হয়।
আসলে সত্যি বলতে, আমাকে যদিও আরও জিগান তাও আমার বন্দি ঘরের আর এডমিশনের গল্পই শুনতে পারবেন। যার ফলে আমি আজকে আর কিছু বলতে চাচ্ছি না। তবে নতুন বছরের প্রথম মাসটা মোটেও আমার ভালো কাটে নাই। ঘরের চার দেওয়ালে বন্দি থেকে হতাশা আর ডিপ্রেশনে কেটে গিয়েছে। তবে বর্তমানে আমি বেশ ভালো আছি। আশা করি সামনের দিনগুলো ভালো কাটবে। আমার লেখার মাঝে অনেক ভুল হতে পারে, আপনারা অবশ্যই সেটা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন৷
সত্যি বলতে লেখাটা লিখতে আমার অনেক কষ্ট হচ্ছিল, পুরোনো সব কথা মনে পড়াটা একজন ছাত্রের জন্য অনেক কষ্টের। তবে সৃষ্টিকর্তা যা করেন তা ভালোর জন্যই করেন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আবারও দেখা হবে আমার নতুন কোনো পোষ্ট নিয়ে।
সবাইকে অনেক ধন্যবাদ আমার আজকের পোষ্টটা পড়ে আপনাদের মূল্যবান মতামতটা জানানোর জন্য।