বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারোকাতুহ।
হ্যালো আমার প্রিয় স্টিমিয়ান বন্ধুরা।
আমি @rasel8. #বাংলাদেশ থেকে।
ছেলেরা একবার যদি বাড়ী থেকে বের হয়,, হয়তবা মৃত্যুর আগে বা চাকরি থেকে অবসর না পাওয়া পর্যন্ত বাড়ীতে স্থায়ী ভাবে থাকতে পারেন না। ২০১৯ সালে পড়াশুনার জন্য বাড়ী থেকে বের হয়েছি। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত ঈদ, কোনো অনুষ্ঠান, বা জরুরি কোনো কাজ ছাড়া বাড়ীতে যাওয়া হয় না। গেলেও এক সপ্তাহ, বা দুই সপ্তাহেরর বেশি ধাকা হয় না। মাঝে মাঝে মনে হয়, কি জীবন নিজের স্বপ্ন পূরণ আর কাছের মানুষদের ভালো রাখতে, নিজের লক্ষ্যের পৌঁছাতে নিজের বাড়ীতেও থাকতে পারি না। আসলে দিন শেষে এটাই হলো ছেলেদের জীবন। এখন পড়াশুনার জন্য বাইরে থাকি, আবার যখন চাকরি পাব তখন চাকরির জন্য বাইরে এভাবে থাকতে হবে। বার্ধক্য না আসা পর্যন্ত জীবন এভাবেই চলতে থাকবে।
গত সপ্তাহে নিজের অসুস্থতার কারণে, বাড়ীতে এসেছিলাম ডাক্তার দেখানোর উদ্দেশ্যে। আজ এক সপ্তাহ হয়ে গেছে। আসলে কোচিং এ ক্লাস চলতেছে কিন্তু, আমি বাড়ী আসছি৷ অনেকগুলো ক্লাস মিস চলে গেছে। যাতে আর ক্লাস বাদ না যায় এজন্য আজকে আবারও গাজিপুরে চলে যেতে হবে। গতকালকেই আমি ট্রেনের টিকিট কেটে রেখেছিলাম। আজকে সকালে যার জন্য একটু ভোরে ঘুম থেকে উঠা লাগছিল। ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে আমার জিনিসগুলো গুছিয়ে নিলাম। এরপর সকালের নাস্তা শেষ করলাম। মায়ের হাতের রান্নার স্বাদ শুধু বাড়ীতে আসলেই পাওয়া যায়, অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। খাওয়া দাওয়া শেষ করে রেডি হলাম। ৯:৪৪ মিনিটে কুমারখালি স্টেশন থেকে আমার ট্রেন ছাড়বে। বাড়ী থেকে সবাইকে বিদায় জানিয়ে চলে আসার সময়।
ভাগিনীকে কোলে নিলাম। কয়েকটা ছবিও তুললাম। আমার বড় ভাইয়ের মেয়ে মাদ্রাসায় সকাল ৮ টার সময়ই চলে গেছে। তখন দেখা হয়েছিল। আসার সময় আর দেখা হয় নাই। আমার দুলা ভাই আমাকে স্টেশনে পৌঁছে দিতে আসল। আমরা বেশ কিছুটা সময় ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করলাম। আমার মূলত কয়েকটা ব্যাগ ছিল সেগুলো ট্রেনে তুলে দেওয়ার জন্য দুলাভাই দাড়িয়ে ছিল। আজকে ট্রেনে প্রচন্ড ভীর ছিল।
![]() | ![]() |
---|
ট্রেন যথা সময়ে চলে আসল। কিন্তু এতোটাই ভীর যে আমি উঠতেই পারতেছিলাম না। ট্রেন ছাড়ার মূহুর্তে আমি ট্রেনে উঠেছিলাম। আর ব্যাগগুলো পরে দুলাভাই তুলে দিয়েছিলাম। এরপর আমি আমার সিটে গিয়ে বসলাম। পাশেই আমার ব্যাগগুলো রাখলাম।
![]() | ![]() |
---|
কুমারখালি থেকে ঢাকা কমলাপুর রেলস্টেশনে পৌঁছেতে প্রায় ৪ ঘন্টা ৩০ মিনিট মতো সময় লাগে। পুরো সময়টায় অলস ভাবে কেটে যায়। তবে আমি বেশির ভাগ সময় ট্রেনে যাওয়ার সময় আমার ফোনটা নিয়ে কাজ করতে থাকি। যার ফলে সময়টা দ্রুত চলে যায়। মাঝে অনেকটা দূর যাওয়ার পর আমি ট্রেনের মধ্যে থেকে সোসা কিনে খেলাম। যদিও আমি যাত্রা পথে কিছু খাওয়স পছন্দ করি না।
দুপুর ২ টার পর আমি কমলাপুর রেলস্টেশনে পৌঁছে গেলাম। এবার আমাকে এখান থেকে গাজিপুর ডুয়েট যেতে হবে। একটু দাড়িয়ে চিন্তা করলাম কিসে যাব। ট্রেন না বাসে। মোটামুটি ২/৩ ঘন্টার পথ। কিন্তু আগামি ২ ঘন্টার মধ্যে গাজিপুর গামি কোনো ট্রেন ছিল না। এজন্য নিরুপায় হয়ে বাসে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।
![]() | ![]() |
---|
আমি হেটে স্টেশনের বাইরে বাস স্টোপে চলে গেলাম। সেখান থেকে গাজিপুর পরিবহন নামে একটা বাসে উঠলাম। ২:৩৯ এর দিকে বাসটা ছাড়ল। আমি আমার গন্তব্যে ৪:৪৫ এর দিকে চলে আসলাম। এরপর সেখানে নেমে আমি আমার আগের মেসে চলে গেলাম৷ যেখানে আমার জিনিসগুলো রাখা আছে। আমি মূলত আজকেই নতুন একটা মেসে শিফট করব৷ মেসে গিয়ে আগে আমি পোশাক না পাল্টে ওই অবস্থায় সকল জিনিসগুলো বস্তা বন্দি করে নিলাম। মাগরিবের পর আমি খাবার খেলাম। দুপুরের খাবারও খাওয়া হয়েছিল না। আমার এক বন্ধু আমার আসার কথা শুনে মেসে মিল দিয়ে রাখছিল। মাগরিবের পর সেই মিলটা খেলাম।
ভাত, ডিম ভুনা ও সবজি তরকারি ছিল। খাওয়া দাওয়া শেষ করে আনি একটা রিকসা ডেকে আনলাম। এরপর রিকসায় সকল জিনিসগুলো তুলে আমার নতুন মেসে নিয়ে গেলাম। আমি এবার সাত তলায় মেস নিয়েছে। অনেক উপর। কোনো লিফটের ব্যবস্থা নাই। সিরি দিয়ে উপরে উঠা লাগে। এশার কিছুটা আগে আমি আমার নতুন মেসে সকল জিনিসগুলো তুলে নিলাম। আমাকে জিনিসগুলো তুলতে আমার দুই বন্ধু অনেক সাহায্য করেছে। আসলে এতো উচুতে সিরি বয়ে নেওয়া অনেক কষ্টের। রুমে গিয়ে আমি আমার সকল জিনিসগুলো ঠিক করে রাখলাম। এরপর মাঝে এশার নামাজের সময় হয়ে গেল। আমি এশার নামাজ আদায় করতে মসজিদে চলে গেলাম। নামাজ শেষ করে আমি আমার বন্ধুদের সাথে একটু চা খেয়ে দোকানে গেলাম। এর মাঝে আমাদের সবার প্রিয় দিদি @sduttaskitchen, ডিসকোর্ডে আমাকে ভয়েসে যুক্ত হতে বললেন। আমি দোকান থেকেই নেটটা অনেক করে ভয়েসে যুক্ত হলাম। তিনি আমাকে অনেকগুলো দিকনির্দেশনা মূলক কথা বললেন যা বমার স্টিমিট যার্নিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে। আমি দিদিকে অন্তর থেকে ধন্যবাদ জানাই। আসলে আমার এতো বছর স্টিমিট যার্নিতে অনেকেই আমাকে বিভিন্ন বিষয় বুঝিয়েছে, কিন্তু সত্যি বলতে দিদির বোঝানোর মতো কখনও পায় নাই।
![]() | ![]() |
---|
আশা করি আমি এখানে দিদির দিকনির্দেশনা মতাবেক চলে কাজ করতে পারব। কথা বলা শেষ করে আমি রুমে এসে বাকি জিনিসগুলো গুছিয়ে হাতমুখ ধুয়ে একটু রেস্ট নিলাম। এরপর আমার মাইগ্রেনের ঔষুধ গুলো খেলাম। দিনে অনেকগুলো ঔষুধ খেতে হয়। যা আমার জন্য বিরক্তিকর। তবুও খেতে হয়।
এরপর আমি আমার ফোনটা নিয়ে বেশ কিছুটা সময় কাজ করলাম। তারপর প্রচন্ড ঘুম পাচ্ছিল। ফোনটা রেখে ঘুলাম। আজকে শরীরের উপর দিয়ে অনেক পরিশ্রম চলে গিয়েছে। যার ফলে অনেক ক্লান্ত এবং শরীরও ব্যাথা হয়েছে। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আবারও দেখা হবে আমার নতুন কোনো পোষ্ট নিয়ে।