কঠিন পরিস্থিতি,
মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি আমি প্রচন্ডভাবে। খুঁজে পাচ্ছি না কোন পথ, বুঝতে পারছি না কোন কথা, কি করব জানা নেই!
কঠিন এই পরিস্থিতির মধ্যে নিজেকে পারতেছি না সান্তনা দিতে, না পারতেছি কোন কুল খুঁজে। ৩ তারিখে আমি অফিস করে বাসায় আসলাম তারপরের দিন অর্থাৎ চার তারিখে আমার অফ ডে।
যেদিন কি ছুটির দিন অর্থাৎ রবিবার সেই দিন আমি জানতে পারলাম সোমবার থেকে অফিস বন্ধ একাধারে তিনদিন। রবিবার রাত্রিবেলায় আমাকে ফোন দিয়ে বলল সোমবারের দিন আপনাকে ডিউটি করতে হবে একটি কাজ আছে। কিন্তু অন্যান্য সেকশন বা আমাদের সেকশনের কর্মরত কেউ আসবে না। দায়িত্ব অর্পণ হয়েছে তাই সেই দিন অফিসে গিয়েছি অর্থাৎ সোমবারে।
যদিও কাজ খুব বেশি ছিল না অর্থাৎ ৮ ঘন্টা সম্পূর্ণ রূপে বসে থাকাই বলা চলে। একটি কাজ ছিল ২০ কেজি পট স্লিপ রেডি করে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে স্টার সিরামিকে। আমাদের এই কোম্পানির বেশ কয়েকটি শাখা রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম একটি শাখাতে পাঠিয়ে দিয়েছি।
এদিকে বন্ধুর দাদি মৃত্যুবরণ করার জন্য বন্ধু বাড়িতে চলে গেল; অন্যদিকে বড় ভাই তার পায়ের ট্রিটমেন্ট করার জন্য বাড়িতে চলে গেল সেখান থেকে ডক্টরের কাছে যাবে।
এদিকে তিন দিন বন্ধ এর মধ্যে একদিন আমি অফিস করলাম বাকি দুইদিন বন্ধ থাকলো। ভাবলাম দুইদিন, বিপ্লব ভাই আছে দুজনে গল্প করতে করতেই চলে যাবে।
এদিকে তিন দিন অতিক্রম করে চতুর্থ দিন পার হয়ে যাচ্ছে কিন্তু কোম্পানি খুলতেছে না। এদিকে আমি এখন একা গৃহবন্দীর মত হয়ে আছি কেননা বন্ধু নাই ভাই নাই খুবই একা একা লাগতেছে আনকমফোর্টেবল লাগতেছে, ভালো লাগতেছে না কোন কিছুই।
অন্যদিকে বিপ্লব ভাই বলতেছে আমি বাড়িতে যাব। আমি আরো একা হয়ে গেলাম। পারছি না বাড়িতে যাইতে পারতেছি না এখানে থাকতে একা একা।
অফিসে কথা বললে স্যারেরা বলে সমস্যা নাই দুইদিন পরেই অফিস খুলবে। এদিকে বড় ভাই ও বন্ধু তারা দুজনেই বাড়িতে যাওয়া একটি সুযোগ কাজে লাগিয়েছে।
বিকেলবেলা হলে আমি একা একাই রেল পথে হাঁটতে থাকি এবং আনমনে অনেক কিছুই ভাবতে থাকি। কৃষক তার মাঠে চাষ করতেছে। শিক্ষার্থীরা মাঠে ফুটবল খেলতেছে। আমি আনমনে সেগুলোই দেখতেছি এবং অনেক কিছুই ভাবতেছি কি করা যায়!
পরিকল্পনা নিয়েই মাঠে নেমে আছি এখনো। চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি পরিকল্পনাটি যথাযথ রূপান্তরিত করা, আর এজন্যই বাড়িতে যেতে পারতেছি না।
রেল লাইনের উপর দিয়ে হেঁটে হেঁটে যাচ্ছি। লাইন অর্থাৎ পাত দিয়ে হেঁটে যাওয়া কিন্তু কষ্টকর। কেননা শরীরের ব্যালেন্স ঠিক রেখে রেল পাতে হাঁটতে হয়।
যতবারই পড়ে যাচ্ছি ততবারই যেন উঠে দাঁড়াতে ইচ্ছা করে আবার হেঁটে যাবো। বেশ দূর পর্যন্ত যেতে পারি আবার পড়ে যাই আবারো উঠি আবারো যাই এভাবেই চলছে। অনেকদূর যাওয়ার পর একটি জায়গা পেলাম সেই জায়গায় বসে বসে সেই কৃষকের কাজ গুলো দেখতেছি আনমনে ভাবতেছি।
দোয়া করবেন আমার জন্য এবং সকলের জন্য। পথ চলার বিভিন্ন বাধা বিঘ্নতা কাটিয়ে উঠতে পারি।
বিকেলবেলা অবশ্যই হাঁটাহাঁটি করে রেল পাতের চ্যালেঞ্জে বেশ ভালই উপভোগ করলাম। কেননা সারাদিন একা একা থেকে আর ভালো লাগতেছিল না, তাই বিকেলে বের হয়েছিলাম পড়ন্ত বিকেল উপভোগ করার সুযোগে।