আজকে আমি আমার এক বন্ধুর প্রথম প্রেমের একটি গল্প শেয়ার করতে যাচ্ছি।হয়তো এক পর্বে তুলে ধরা সম্ভব নয় তাই কয়েক পর্বে শেয়ার করবো।তবে গল্পটা আমার তার আবেগ জড়ানো নিজ কন্ঠে শোনা। তো কথা না বাড়িয়ে শুরু করি বন্ধুর প্রথম প্রেমের গল্প।
প্রেম নিয়ে প্রথমেই দু-চারটা লাইনে নিজের মত করে কবিতা লিখি, তারপর গল্পতে ফিরে যাবো।
ধরা নাহি যায়।
যার নসিবে রাখে বিধাতা,
সেই শুধু পায়।
কেউবা আবার প্রেম করে,
সদ্য প্রেম হারায়।
কেউবা আবার প্রেম করে,
বিয়ের কাঠগড়ায়।
আমার বন্ধুর প্রেমের কথা বলতে গেলে কোথায় থেকে শুরু করবো, কোথায় শেষ করবো সেটা আসলে বলা মুশকিল। তাই চিন্তা করলাম একপাশ থেকে শুরু করি যেখানে গিয়ে শেষ হয়।তবে গল্পের আকর্ষণ বজায় রাখতে বন্ধুর জায়গাতে আমি নিজেকেই কল্পনা করে গল্পটি লিখছি চলুন শুরু করা যাক।
সবাই বলে মানুষের জীবনে প্রেম আসে একবার এ কথাটা আমিও বিশ্বাস করি। কেননা প্রথম প্রেম সফল হোক বা না হোক তারপরে যেটাই আসবে সেটা আর প্রেম হবে না।কেননা মন প্রাণ উজাড় করে একজনকে ভালোবাসা যায় দশ জনকে নয়।আর সেই একজনের অবর্তমানে যদি আরেকজনকে ভালোবাসা হয়,সেটি ভালোবাসা নয়, বরং ভালোবাসার নামে প্রতারণা।
আমি এমন এক ব্যক্তি ছিলাম রাস্তায় বের হলে কোন মেয়ের দিকে তাকাতাম না।রিক্সায় করে বা হেটে যখন মেয়েরা যেত তখন মেয়েদের দিকে ভুলেও তাকাতাম না।কেননা মেয়েরা যদি আমার দিকে একবার তাকাতো বা কোনভাবে চোখ মারতো অথবা হাসতো তখন তো আমার দম বন্ধ হওয়ার অবস্থা,যার কারণে চুপচাপ হেটে চলে যেতাম,কোন মেয়ের সাথে কথা এবং তাকানো হতো না।
ক্লাস নাইনে পড়া কালীন একদিন আমার এক বন্ধুর সাথে মেয়েদের কমন রুমে গিয়েছিলাম। বন্ধুটি তার বোনকে টিফিন দেওয়ার জন্য গিয়েছিল, সাথে আমাকে নিয়ে গিয়েছিল। সেখানে যাওয়ার পরে বড় আপুরা আমাকে দেখে মুখটা টেনে দিল সেই যে বিশাল লজ্জা পেলাম, তখন থেকেই কোন মেয়ের দিকে তাকাতে লজ্জা হতো।
যখন ক্লাস টেন এ পড়ি তখন মনের ভেতর কিছুটা রোমান্স কাজ করতো। মনে হতো প্রেম জিনিসটা কি একটু উপলব্ধি করি। ভাবতে পারছেন যে ছেলেটা এত লাজুক সেই ছেলেটার মধ্যেও বিধাতা কি ঢুকিয়ে দিল,ভালবাসার অনুভূতি। সেই অনুভূতি মনের ভিতরে হাসপাশ করতো এবং তখনই একদিন হঠাৎ একটি চমক এসে পড়লো আমার চোখের সামনে।
আর সেটি হল একটি মেয়ে আমাদের ঘরে দেখতে পাই।সেদিন ছিল বৃহস্পতিবার স্কুল থেকে যখন বাড়ি ফিরলাম, দুপুরবেলা দেখতে পাই মেয়েটি আমাদের টিউবওয়েল আঙ্গিনায় গোসল করেছিল। যদিও আমি হেঁটে চলে গিয়েছি আমার রুমের দিকে, তবে হালকা চোখ পড়ছিলো বা মন বলছিল কোন সুন্দর একটি মেয়ে সেখানে ছিল।
যাইহোক আমি নিজেও ফ্রেশ হওয়ার জন্য জামা কাপড় পরিবর্তন করে পুকুর থেকে গোসল করে আসলাম। তবে মেয়েটিকে দেখতে পেলাম না আর।তখন মনে হলো কোন একটি রুমে সে লুকিয়ে আছে লাজুক লতার মত।
।।।।।।।
।।।
হঠাৎ আমাদের একটি রুমে দেখতে পাই মেয়েটি বসা এবং টিভি চলছিল পুরো রুম ভর্তি মানুষ আমাদের সবার আত্মীয়-স্বজনরা একসাথে রুমে বসে টিভি দেখছিল।ওদের মাঝখানে মেয়েটি বসা ছিল। তখন মনের কৌতুহল এবং মনের আকুতি মিনতি মেয়েটাকে একটু দেখার।
তাই সরাসরি রুমে গিয়ে দেখতে মন চাইলেও কোনভাবে লজ্জার কারণে যেতে পারছিলাম না। এমতাবস্থায় রুমের দরজা খোলা ছিলো, তবে আমি একবার রুমের সামনে দিয়ে এদিক গেলাম আবার ওই দিক গেলাম এই ভাবে করে করে কয়েকবার করে মেয়েটিকে এক পলক দেখলাম।
তখন বুকের বাম পাশে কেমন করে একটা সংকেত প্রদান করল মনে হল মেয়েটা আমার অনেক পরিচিত। অনেক প্রিয়জন অনেক আগ থেকে চেনা। এই মেয়েটাকে আমার দেখতেই হবে, কথা বলতেই হবে।এরকম একটা ভাব চলে এসেছে।
বুঝতে পারছেন যে ছেলেটা এত লাজুক তার মধ্যে কি কাজ চলছে এখন। যাই হোক তখন মেয়েটিকে সরাসরি এক পলক দেখতে পেলাম যখন মেয়েটি রুম থেকে বাইর হয়েছিল। সেটা দেখার পরে নিজের মধ্যে অনেক উত্তাল পাতাল শুরু হল, এবং এত সুন্দর একটি মেয়ে আমাদের ঘরে কিভাবে এসেছে কার মাধ্যমে এসেছে সেটা জানার আগ্রহ বেড়ে গেল।
কারণ তখন ও পর্যন্ত আমি জানিনা যে মেয়েটি কে এবং জানতে চাইওনি। কারণ আমার প্রধান লক্ষ্য হলো মেয়েটিকে দেখা যতই দেখি ততই ভালো লাগে। আর সেই ভালোলাগা থেকেই শুরু হয় ভালোবাসা। যেটাকে বলা হয় লাভ এট ফাস্ট সাইট।
যাইহোক মেয়েটিকে দেখার পরে আমি আমাদের ঘরে খাওয়া দাওয়া করলাম। দুপুরে খাওয়া-দাওয়া করা শেষে আমি মাঠে গেলাম ক্রিকেট খেলার জন্য।খেলাধুলা শেষ করে তাড়াতাড়ি আসবো চিন্তা করেছিলাম,কারণ মেয়েটিকে দেখার জন্য।
ভাবলাম বাড়ির দরজায় দাঁড়িয়ে থাকবো, মেয়েটি যখন রিকশায় করে বাইর হবে তখন আমি এক অপলক নয়নে দেখবে। সেই আশায় তাড়াতাড়ি খেলাধুলা শেষ করে বাড়ি ফিরলাম, এবং বাড়ির দরজায় অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলাম। কিন্তু হাই মেয়েটিকে দেখতে পেলাম না। মনটা বেজায় খারাপ, চলে গেলাম বাড়িতে।
বাড়িতে গিয়ে ফ্যামিলির লোকজনকে জিজ্ঞেস করলাম মেহমান কি চলে গেছে, তখন বলল তারা অনেক আগেই চলে গেছে। তখন তো মাথায় আসমান ভেঙ্গে পড়ল।কেন যে খেলতে গেলাম কেন যে তাকে হারালাম।
।।।।।।।
তখন মনে হলো অনেক আপন কেউ একজন আমাকে ছেড়ে চলে গেছে।তবে তখন জানতে পারলাম যে মেয়েটা কার সাথে এসেছিলো।যাইহোক কি আর করার তখন ভারাক্রান্ত মন নিয়ে চলে গেলাম বাইরে নিজেকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য। অবশেষে পরের দিন দেখতে পাই আমার এক খালামণি মানে হচ্ছে আমার জেঠিমার বোন এসেছে আমাদের বাড়িতে, আর সেই মেয়েটি গত কাল ওই খালামণির সাথেই এসেছিলো।
তখন আমি জেঠিমার বোন মানে খালামণিকে জিজ্ঞেস করলাম, খালামণি আপনার সাথে যে মেয়েটা এসেছে সেটা কে। তখন তিনি পরিচয় দেন সেই মেয়েটা ওই খালামনির জা এর মেয়ে। তার সাথে নিয়ে এসেছে আমাদের বাড়িতে।তখন খালামণি আমাকে বলে তার নাম্বারে একটা কল দিতে। তো তখন আমি বললাম আপনার নাম্বার তো আমার কাছে নেই।তিনি বলেন আমার মোবাইলটা রেখে এসেছি, একটা কল দাও আর তুমি এখন কল দিলে ও ধরবে।
তখন খালামণি সর্বপ্রথম ওই মেয়েটার নাম নিলো আমার সামনে। আর আমি জানতে পারি মেয়েটার নাম।তবে নাম শুনে আমি ন্যাকামো করে জিজ্ঞেস করলাম খালামণি ও কে।খালামণি বললো গতকালকে আমার সাথে যে মেয়েটা এসেছিল ওই মেয়েটা। তখন আনন্দে মনটা আনচান আনচান করছিল মেয়েটার নাম অন্তত জানতে পারলাম।
তারপর আমি আমার এক বন্ধুর দেওয়া একটি বাংলা লিংক সিম দিয়ে মেয়েটিকে কল দিই। মানে আমার খালামণির ফোনে কল দিলাম। কল দেওয়াতে ফোনটি উঠালো সেই মেয়েটি আমার মোবাইলে ব্যালেন্স ছিল 2 টাকা 67 পয়সা। সেই টাকা দিয়ে বড়জোর দেড় মিনিটের মত কথা বলতে পারলাম। প্রথমেই আমাকে সালাম দিলো, আমিও দিলাম।
তখন কূশল বিনিময় করলাম তারপর আমাকে বলে যে আপনি কে? আমি বললাম আমাকে চিনতে পারলেন না, আপনিই তো আমাকে নাম্বারটা দিয়েছেন। তখন সে খুব সুন্দর ভাবে টেনে ন্যাকামো করে একটা ডাক দিয়ে বললো উউউহহহ আমি দিয়েছি?আর এরই মাঝে আমার ফোনের ব্যালেন্সটা শেষ হয়ে যায়।যাই হোক খালামণিকে বুঝতে দিলাম না যে আমি ওই মেয়েটার ভালোবাসায় ফিদা হয়ে গেছি।
তখন আমি রুম থেকে বাইর হয়ে চলে গেলাম এক প্রিয় বন্ধুর বাসায়। তাকে বাসা থেকে বের করে অনেক জোরে জড়িয়ে কোলাকুলি করলাম আর হাসতে লাগলাম। তখন সে জিজ্ঞেস করল কিরে কি হয়েছে আমি বললাম বলবো চল বাইরে গিয়ে তাকে সম্পূর্ণ বিষয়গুলো বলি এবং নিজের ভালোবাসা অনুভূতি শেয়ার করলাম। সেই শুরু হলো মনের ভিতর এক ভালবাসা কিভাবে যে একটা মেয়েকে এভাবে পছন্দ করে ফেললাম নিজে কখনো কল্পনাও করিনি।
এতো লাজুক একটা ছেলে হয়ে কিভাবে মেয়েটাকে ভালোবেসে ফেললাম। যাই হোক পুনরায় আগের পয়েন্টে ফিরি।মেয়েটির মুখের ভাষা ও গলা এত মিষ্টি এত সুন্দর ছিল যেটা আমার কানে এখনো বাজে, এত সুন্দর ভাবে কথা বলছিল মেয়েটি। পরের দিন খালামণি চলে যায় এবং খালামণি থেকে আমি তার নাম্বারটা সেভ করে রাখি। বলি আমি যে কোন সময় আপনাকে দেখতে আসবো।
খালামণি অনেক আন্তরিক ছিলো।বললো আমার বোনের কোন ছেলে নেই। তুই আমার বোনের ছেলের মত, যে কোন সময় আসবি খালামণিকে দেখার জন্য। আমি বললাম ঠিক আছে খালামনি আমি যখনই আপনাদের ওদিকে যাব আপনার সাথে দেখা করে আসবো। খালামণির প্রতি অনেক বেশি আন্তরিক হয়ে গেলাম। কিন্তু আপনারা বুঝতে পারছেন আমার তো টার্গেট আমার সেই প্রথম ভালবাসাকে দেখতে হবে কাছে থেকে। তাই এই বাহানা বানানো আর কি।
।।।
তারপর একদিন আমি সাহস করে আমার এক বন্ধুকে নিয়ে চলে গেলাম সেই খালামনির বাড়িতে।প্রথমে খালামনির সাথে ফোনে যোগাযোগ করে যেনে নিলাম কিভাবে যাবো। যাওয়ার পরে সেখানে মেয়েটিকে দ্বিতীয় বারের মত সরাসরি দেখতে পেলাম।তখন মেয়েটাকে দেখে আনন্দে মনটা ভরে গেলো।মনে হলো সে আমার ভালোবাসার মানুষ।
যাইহোক মেয়েটা যাখন খালামনির ঘরে আসে তখন খালামনি আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।তারপর আমরা একে অন্যের সাথে অনেক কথা বলতে শুরু করি।এক পর্যায়ে অনেকটা আপন ও অনেক ক্লোজ হয়ে গেলাম মনে হচ্ছিলো।কথা বলতে বলতে জানতে পারলাম সে আমার ক্লাসমেট।মানে আমি ক্লাস টেন এ ছিলাম সেও টেন এ পড়ে।
এরপর খালামনি তার জা এর সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দিলো।মেয়েটির আম্মু আমাকে অনেক বেশি আন্তরিকতা দেখিয়েছিল।আর তার আন্তরিকতা আমার মন কেড়ে নিলো। একেবারে জামাইয়ের মতো আন্তরিকতা দেখাতেছিলো।আবার সেদিন দুপুরে তাদের বাসায় খেলাম।আমাদের জন্য ঘরের মুরগি জবাই করলো, পুকুর থেকে কাতলা মাছ উঠালো আরো কত কি করলো বলে শেষ করা যাবেনা।
খাওয়া দাওয়া শেষে আসার আগে নিজেদের গরুর দুধ দিয়ে কফি বানিয়ে খাওয়ালো। আর তাদের সবার কথায় বোঝা গেল সবাই অনেক বেশি আন্তরিক।আর তাদের চলা ফেরা কথা বার্তায় বোঝা যাচ্ছিল খুব বংশধর একটি পরিবার। তবে এর আগে আমি কখনো ওই বাড়িতে যাইনি। এই প্রথম একটা বাহানা বানিয়ে যাওয়া হলো।আর বাহানাটা কি তা তো আপনারা জানেন।
যাইহোক যখন বিকেল বেলায় আমরা দুজন চলে আসতেছি। তখন মেয়েটি বলল থাকার জন্য।আমি বললাম এখন তো থাকা যাবে না তবে সুযোগ পেলে অন্য কখনো আসবো। তবে স্বল্প সময়ে ও অল্প আলাপে সে যে আমাকে থাকার জন্য বললো সেটাও মন কেড়ে নিলো। ভাবলাম মেয়েটি হয়তো আমাকে পছন্দ করে।যাই হোক ফিরে গেলাম বাড়িতে। বাড়িতে আসার পরে পড়াশোনায় মন বসে না।
বইয়ের পাতা উল্টাতেই মেয়েটির চেহারা ভেশে উঠতো। যেখানে সেখানে আনমনে মেয়েটির কথা ভাবতাম। তখন চিন্তা করলাম এখন তো মোবাইলের যুগ প্রেম তো খুবই সহজ। তাই একটা ওয়ারিদ সিম কিনলাম কেননা তখন ওয়ারিদ সিম নতুন আসলো মার্কেটে । আর প্রতিদিন ৫০ টাকা করে একটি কার্ড কিনতাম মেয়েটার সাথে কথা বলার জন্য।
যদিও এখনো সে কার্ডগুলো আছে তবে সে গুলো দিয়ে আমাদের আলমারির জন্য চাবির রিং বানিয়ে রেখে দিয়েছি। যাই হোক শুরু করলাম ফোন আলাপ। খালামণিকে ফোন দিতাম এবং কথা বলতাম। কিছুক্ষণ খালামণির সাথে কথা বলে মেয়েটিকে দিতে বলতাম। মেয়েটিও আমার সাথে কথা বলতো। খুব সুন্দর করে দুজনে কথা বলতাম।যখন ব্যালেন্স শেষ হয়ে যেত মনে হতো পৃথিবীতে আমার মত গরীব আর কেউ নেই।
নিজের মনকে খুব কষ্টে বেঁধে রাখতাম,আর বুঝাতাম কালকে আবার বাজারে গেলে ৫০ টাকার কার্ড নিয়ে আবার কথা বলবো।আসলে তখন তো ছিলাম স্টুডেন্ট এত টাকা পাবো কই রাত দিন কথা বলার জন্য। তাই কোনভাবে যেটুকু ম্যানেজ করতাম সেটা ফোন আলাপে উড়িয়ে দিতাম।তার সাথে কথা বলতে এত ভালো লাগতো সেটা বলে বোঝানো যাবে না।
।।।।।
।।।
।।
যাইহোক এভাবেই অনেকদিন কথা বললাম। আর কথা বলতে বলতে কয়েক মাস পার হয়ে গেল। তখন তাদের বাড়িতে যাওয়ার জন্য আবার বাহানা বানাচ্ছিলাম।আর তখন আমি একটি ছড়াও লিখেছিলাম। ছড়াটি এরকম ছিল যে সুখের খোঁজে যাবো,সুখ নিয়ে আসবো। সারা গায়ে মাখবো। যতদিন না আবার পাবো।ততদিন ধরে রাখবো।
আর এই ছড়ার মানে হচ্ছে,সে ছিলো আমার সুখ তাই তাকে খুঁজতো যাবো।আর তার সাথে দেখা করবো এবং তাকে যতদিন আবার না দেখতে পাবো ততদিন পর্যন্ত নিজের স্মৃতিতে জড়িয়ে রাখবো। এটি ছিল আমার সেই কয়েকটা লাইনের মর্মার্থ।যাইহোক তখন একটা বাহানা ধরেই চলে গেলাম তাদের বাড়িতে।
যাওয়ার পরে সেখানে আবার পুনরায় জামাই আদর শুরু।সেদিন যখন নাস্তা দিল খাওয়ার জন্য,তখন আমি এবং মেয়েটি একসাথে বসে নাস্তা করলাম।নাস্তায় অনেক কিছুই ছিলো তবে তার মাঝে আমার জন্য একটি ডিমের অমলেট ছিলো। তখন আমি অমলেটের কিছু অংশ খেয়েছি, বাকি অংশ তাকে খেতে দিলাম আর সেও খেলো। সেটি দেখে অনেক ভালো লাগলো।
একটা মেয়ে আমার খাওয়ার বাকি অংশ সে খেলো এটা সচরাচর ঘটে না।তখন মনে হলো ভালোবাসা কিছুটা গভীরে যেতে লাগলো।যাইহোক সেদিন তারা থাকার জন্য বললো কিন্তু থাকার সুযোগ ছিলোনা।তাই বাড়িতে চলে আসতে হলো। আসার পরে প্রতিনিয়ত ফোন আলাপ হতেই থাকতো।
অনেক কথোপকথন হতো তার সাথে । অনেক মজা করতাম তার সাথে, তবে খারাপ কোন উদ্দেশ্য দুজনের মধ্যে ছিল না।কেননা প্রথম ভালোবাসা বলে কথা। প্রেম টা কিভাবে করে সেটাই জানতাম না,খারাপ উদ্দেশ্য কিভাবে জন্ম নেবে।আর প্রথম ভালোবাসা এমনিতেই পবিত্র হয়ে থাকে।তাই কেউ এ এই প্রথম ভালোবাসার অবজ্ঞা করে না।
যাইহোক এরপর কিছুদিন যেতে না যেতে আবারও গেলাম মেয়েটির বাড়িতে। যাওয়ার পরে সেই আবারো আদর আপ্যায়ন চললো।সেদিন বিকেলে আসার পথে মেয়েটি আমার নাম ধরে ডাকলো এবং বললো আজকে না যেতে। আমি বললাম না এখন থাকা যাবে না পড়াশোনা আছে যেতে হবে। আর সেও তো আমার ক্লাসমেট ছিল। মানে আমি ক্লাস টেনে পড়তাম, মেয়েটিও ক্লাস টেনে পড়তো। যার কারণে সমবয়সী ছিলাম আমরা।
কিন্তু প্রেম তো মানে না বয়স। মানে না সে কোন ক্লাসে পড়ে। প্রেম তো অন্ধ এক পলকেই হয়ে যায়। আর সেটি অনেক সময় কাল হয়ে দাঁড়ায়। যাই হোক মেয়েটি যখন বললো না যেতে তখন আমি বললাম আমার পড়াশুনা রয়েছে যেতে হবে। তখন চলে আসতে ছিলাম, সেদিন বিদায় বেলায় মেয়েটি আমার সাথে হাতে হাত মিলিয়ে ফ্রেন্ডশিপ করে। আর বলে থাকলে খুশি হতাম সবাই মিলে রাতে গল্প করতাম।যাইহোক উপায় না থাকায় চলে আসতে হলো।
তবে এই প্রথমবারের মতো মেয়েটির হাতে আমার হাত লাগে এবং প্রথম স্পর্শ তখনই হয়। কোন একজন গুণী লোক বলে গিয়েছেন প্রথম প্রেমের প্রথম ছোঁয়া,আগুন ছাড়া দারুন ধোয়া ঠিক তেমনি মনের অন্তরালে ধোয়া বের হচ্ছিল। কারণ প্রথম ভালবাসার হাত এই সর্বপ্রথম স্পর্শ করতে পেরেছি। বুকের ভিতর কেমন অনুভূতি হয়েছিল সেটা বলে অথবা লিখে বোঝানো সম্ভব না। যাইহোক এই অবস্থায়ও সেখান থেকে ফিরে আসলাম বাড়িতে।
।।।